আল-আমীন, মেহেরপুর:
ছিলেন দিনমজুর। দারিদ্রতার কষাঘাতে নিষ্পেশিত হচ্ছিল মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম। ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে তিনি শুরু করেন হাঁসের পালন। প্রথম অবস্থায় মাত্র ৩০টি হাঁস নিয়ে শুরু করেন তার সংগ্রাম। নানা চড়াই উৎরাই পেরিয়ে তিনি আজ বিশাল একটি হাঁস খামারের মালিক। তার খামারে বর্তমানে হাঁস রয়েছে ৮শ টি। এ হাঁস পালনের মাধ্যমেই সিরাজুল ইসলাম এখন লাখপতি।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ভাটাপাড়া গ্রামের দীনমজুর সিরাজুল ইসলাম (৫৭) তার সফলতার গল্প জানান দৈনিক আকাশ খবরকে। তিনি বলেন, ‘প্রথমে ৩০টি হাঁস নিয়ে ছোট একটি খামার করি। সে সময় দারিদ্রতার কারনে আমার পক্ষে বড় ধরনের খামার তৈরির অর্থ ছিলো না। তাই শুরুটা হয়েছিল ছোট পরিসরে। বর্তমান তার খামারের প্রায় ৮০০টি হাঁস আছে। প্রতিদিন তার খামারের ২০০টি থেকে ২৫০টি মত হাঁসে ডিম দেয়। এই ডিম বাজারের বিক্রি করে প্রতিদিন গড়ে আয় হয় প্রায় ২ হাজার টাকা।
তিনি আরো বলেন, হাঁস পালনে তেমন কোন পরিচর্যার প্রয়োজন হয়না। সকালে হাঁসগুলোকে নিয়ে গ্রামের একটি বিলে চরিয়ে নিয়ে আসি। বাড়িতেও তেমন কোন খাবার দেয়া লাগেনা। সকাল বিকাল সামান্য কিছু ধান দিয়ে থাকি খাবার হিসেবে। বর্তমান হাঁসই আমার সস্পদ এই দিয়ে সংসারের যাবতীয় খরচ চালিয়ে থাকি।
ভাটাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম জানান, সিরাজুল ইসলাম অনেক কষ্ট করে তার হাঁসের খামারটি গড়ে তুলেছেন। বর্তমান সে অনেক ভালো অবস্থায় আছে।
একই গ্রামের বাসিন্দা হয়রত আলী জানান, মানুষের ইচ্ছাশক্তি মানুষকে অনেক দুরে নিয়ে যেতে পারে তার উজ্জল দৃষ্টান্ত সিরাজুল ইসলাম। যিনি বৃদ্ধ বয়সেও সে নিজের পাঁয়ে দাঁড়িয়ে অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। দেশের প্রতিটি মানুষের এই ধরনের উদ্যম ইচ্ছা শক্তি থাকার দরকার। তাহলে কেউ পরিবারের কাছে বোঝা হবে না।
৮নং ধানখোলা ইউপি চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান বলেন, ভাটাপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম স্বনির্ভরশীল একজন ব্যাক্তি। সে নিজে বৃদ্ধ বয়সেও এই হাঁসের খামারের মাধ্যমে নিজেকে আত্মনির্ভরশীল হিসেবে গড়ে তুলেছে। এখন গ্রামের প্রতিটি মানুষের জন্য আদর্শিক সিরাজুল।