চুয়াডাঙ্গার শতাধিক ব্যক্তির অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধানে মাঠে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ লক্ষ্যে দুদকের আঞ্চলিক উপ-পরিচালক মোঃ জাকারিয়ার নেতৃত্বে শক্তিশালী একটি টিম কাজ করছে।
দুদকের ওই তালিকায় জেলার আলোচিত বেশ কয়েকজন বিতর্কিত ঠিকাদার, রাজনৈতিক নেতা, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সরকারী কর্মকর্তারও নাম রয়েছে। আছেন মাদক কারবারির সাথে জড়িত শীর্ষ কয়েকজনের নামও।
বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে চাপ সৃষ্টি ও উৎকোচ দিয়ে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নেওয়া, নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত বেশ কয়েকজনের নামও রয়েছে তালিকায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের কুষ্টিয়া অঞ্চলের উপ পরিচালক মোঃ জাকারিয়া। রোববার দুুপুরে তিনি আকাশ খবরকে জানান, চুয়াডাঙ্গার প্রায় শতাধিক ব্যক্তির সম্পদের অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে। ইতিমধ্যে সম্পদের বিবরনী চেয়ে দূর্নীতি দমন কমিশনের সচিব স্বাক্ষরিত চিঠি বেশ কয়েকজনকে দেওয়া হয়েছে। যারা চিঠির উত্তর দিয়েছেন তাদের তথ্য উপাত্তগুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
দুদক কর্মকর্তারা বলছেন, শুধু অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীরাই নয়, তাদের স্ত্রী-সন্তান, নিকট আত্মীয় স্বজনদেরও সম্পদের অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে।
এছাড়া দুদকের ওই তালিকায় থাকা কয়েকজনের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের সাথে জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করছে এলিট ফোর্স র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
দূর্নীতি দমন কমিশনের একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিগত কয়েক বছরে চুয়াডাঙ্গায় হঠাৎ করে বিত্ত-বৈভবের মালিক বনে যাওয়া এমন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তাদের প্রাথমিক অনুসন্ধান শুরু হয় কয়েক মাস আগে থেকেই। এক্ষেত্রে দুদকের পাশাপাশি বিভিন্ন সোর্স ও গণমাধ্যমকর্মিদের সহযোগিতা নেওয়া হয়। কয়েক দফায় বিভিন্ন পর্যায় থেকে অনুসন্ধান শেষে বেশ কয়েকজনের সম্পদের তথ্য চেয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তদন্তে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ ও ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগও রয়েছে কারও কারও বিরুদ্ধে। সেগুলো আরও তদন্ত করা হচ্ছে।
দুদকের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা আকাশ খবরকে জানান, অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীরা কোন দল করেন বা কোন মতবাদে বিশ্বাসী- এটি তাদের কাছে মুখ্য নয়। এ ক্ষেত্রে তারা দেখছেন তাদের তফসিলভুক্ত অপরাধ। বিতর্কিত মাদক ব্যবসার পাশাপাশি যারা টেন্ডারবাজি, নিয়োগ বাণিজ্য, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মালিক হয়েছেন তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। যদি কোনো সরকারি কর্মকর্তা জড়িত থাকেন, তাদেরও বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না।
দুদকের কুষ্টিয়া অঞ্চলের সহকারী উপ পরিচালক মো: নাসিরুল্লাহ জানান, দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ অবৈধ সম্পদ অর্জনকারীদের পাশাপাশি মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকের গডফাদারদের অবৈধ সম্পদের খোঁজে জোরেশোরে অনুসন্ধান শুরুর নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া দুদকের তালিকার বাইরে আরও কোনো তালিকা থাকলে তা দুদককে সরবরাহ করতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানদের কাছে চিঠি দেবে দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক।