নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা শহরের হাসপাতাল সড়কের এ.আর হাসপাতালে অপচিকিৎসায় এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। একইসাথে ওই ক্লিনিকের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। গতকাল সোমবার সকালে ওই ক্লিনিকটি পরিদর্শন করেন তদন্ত কমিটির সদস্যরা।
এর আগে গত শনিবার (৮ জুন) সকাল ১০ টার দিকে কোন সার্জন এবং অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক ছাড়াই প্রসূতি রুপালী খাতুন (২৮) নামের এক প্রসূতির অস্ত্রোপচার (সিজারিয়ান অপারেশন) করার অভিযোগ ওঠে এ.আর হাসপাতালের মালিক ডা. রফি উদ্দিন রফিকের বিরুদ্ধে। অপারেশনের পর প্রসূতির অবস্থা বেগতিক হলে দ্রুত অ্যাম্বুলেন্স ডেকে কুষ্টিয়ায় পাঠানো হয়। পথের মধ্যেই ওই নারীর মৃত্যু হয়। মৃত রুপালী খাতুন আলমডাঙ্গা উপজেলার চিৎলা গ্রামের ফরজ আলীর স্ত্রী।
এ ঘটনার পর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চালায় অভিযুক্ত চিকিৎসক রফি উদ্দিন রফিক। এজন্য ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকেও কোন অভিযোগ ছিল না। তবে বিষয়টি জানাজানি হলে ব্যবস্থা নেয় জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
অভিযোগ রয়েছে, ডা. রফি উদ্দিন রফিক সার্জন না হয়েও হরহামেশাই অপারেশন করে থাকেন। সাথে নেন না কোন অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক। গত শনিবারও রুপালি খাতুন নামে ওই প্রসূতির অপারশেনের সময় একই কান্ড ঘটিয়েছেন তিনি। সার্জন না হয়েও ওই প্রসূতির অপারেশন করেন ডা. রফিক নিজেই। অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক হিসেবে প্রথমে কুষ্টিয়ার চিকিৎসক আব্দুল্লাহ আল মামুনের নাম উল্লেখ করলেও পরে তিনি খুলনার এক নারী চিকিৎসকের নাম প্রকাশ করেন। তা নিয়েও সন্দেহের দানা বাঁধে।
চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, এ.আর হাসপাতালের সকল কার্যক্রম সাময়িক বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ ঘটনায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আওলিয়ার রহমানকে প্রধান করে ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের সিনিয়র গাইনি কনসালটেন্ট ডা. হোসনা জারি তাহমিনা আঁখি ও সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. শামীমা ইয়াসমিন। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।