নিজস্ব প্রতিবেদক:
দ্বিতীয় ধাপে চুয়াডাঙ্গা সদর ও আলমডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহন আজ মঙ্গলবার। ইতিমধ্যে ভোট গ্রহনে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে রিটার্নিং অফিসার ও নির্বাচন কমিশন। সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলবে ভোট গ্রহনের কার্যক্রম। ভোট হবে ব্যালটের মাধ্যমে। দুটি উপজেলার ৫ লাখ ৫৯ হাজার ৫১ জন ভোটার ব্যালটের মাধ্যমে তাদের রায় জানাবেন। এজন্য গতকালই দুটি উপজেলার ২১৭টি ভোটকেন্দ্রে নির্বাচনী সরঞ্জাম পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। তবে ব্যালট পেপার পাঠানো হয়েছে আজ ভোরে। এদিকে নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা গ্রহন করা হয়েছে। মাঠে থাকছে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেইসাথে দায়িত্ব পালন করবেন জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা।
গতকাল সোমবার সহকারি রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় (স্ব স্ব উপজেলা পরিষদ চত্বর) থেকে কেন্দ্রে কেন্দ্রে পাঠানো হয় নির্বাচনী সরঞ্জাম। কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে নির্বাচনী সরঞ্জাম প্রিজাইডিং কর্মকর্তার উপস্থিতিতে নির্ধারিত কেন্দ্রের দায়িত্বশীল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ৯৯টি কেন্দ্রে পাঠানো হয় এসব সরঞ্জাম। মোট ৭৪০টি কেন্দ্রে ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন ভোটাররা। অপরদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলার ১১৮টি কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে সরঞ্জাম। সেখানে ৮০৮টি কেন্দ্রে ভোট দিবেন ভোটাররা।
নির্র্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা জানিয়েছেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উৎসবমুখর করতে সকল প্রস্তুতি গ্রহন করা হয়েছে। দুটি উপজেলার প্রত্যেকটি কেন্দ্রে ৪ জন করে পুলিশ সদস্য ও ১৪ জন করে আনসার সদস্য উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশের টহল টিম ও এক প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। এসবের পাশাপাশি দুটি উপজেলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে র্যাবের ৪টি টহল টিম ও ২ প্লাটুন বিজিবি মাঠে কাজ করবে। একইসাথে ভোটের মাঠে থাকবে ২৬ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ২ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট।
চুয়াডাঙ্গা জেলা নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা গেছে, একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত সদর উপজেলায় মোট ভোটারের সংখ্যা ২ লাখ ৬৩ হাজার ৮৪৯ জন। এর মধ্যে নারী ১ লাখ ৩২ হাজার ৪০৮ ও পুরুষ ১ লাখ ৩১ হাজার ৪৩৭ জন। তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন আরও ৪ জন। এ উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ৯৯টি। ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৪০টি।
আলমডাঙ্গা উপজেলার মধ্যে রয়েছে একটি পৌরসভা ও ১৫টি ইউনিয়ন। এ উপজেলায় এবার মোট ভোটার ২ লাখ ৯৫ হাজার ২০২ জন। যার মধ্যে নারী আছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৫৯৫ ও পুরুষ ১ লাখ ৪৮ হাজার ৬০৫ জন। একইসাথে তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার আছেন ২ জন। এ উপজেলায় মোট ভোটকেন্দ্র ১১৮টি। আর ভোট কক্ষের সংখ্যা ৮০৮টি।
এ দুটি উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী ৮ জন, ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ১৩ জন এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন।
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এবার ৩ প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন, বর্তমান চেয়ারম্যান আসাদুল হক বিশ^াস। তিনি আনারস প্রতীক নিয়ে লড়ছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল হক মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এছাড়া ভোটযুদ্ধে রয়েছেন ঘোড়া প্রতীকের প্রার্থী নঈম হাসান জোয়ার্দ্দার। এ উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান (গরীব রুহানী মাসুম) টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে, হাফিজুর রহমান চশমা প্রতীক, মামুন-অর-রশীদ তালা, মিরাজুল ইসলাম (কাবা) উড়োজাহাজ প্রতীক ও শামীম হোসেন মাইক প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এছাড়া মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছা. সাহাজাদী মিলি কলস প্রতীক, নুরুন্নাহার কাকলী হাঁস প্রতীক ও মাসুমা খাতুন ফুটবল প্রতীক নিয়ে লড়ছেন।
অপরদিকে, আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৫জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে রয়েছেন, বর্তমান চেয়ারম্যান দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী আইয়ুব হোসেন, মোটরসাইকেল প্রতীকের কেএম মঞ্জিলুর রহমান, ঘোড়া প্রতীকের জিল্লুর রহমান, আনারস প্রতীকের মোমিন চৌধুরী (ডাবু) ও কাপ-পিরিচ প্রতীকের নুরুল ইসলাম। একইসাথে ভাইস চেয়ারম্যান পদে জন্য বই প্রতীক নিয়ে মামুনার রহমান, তালা প্রতীক নিয়ে আহমেদ হাবিব খান, উড়োজাহাজ প্রতীক নিয়ে আজিজুল হক, টিউবওয়েল প্রতীক নিয়ে মকলেছুর রহমান, পালকি প্রতীক নিয়ে সোহেল রানা (শাহীন), মাইক প্রতীক নিয়ে মাসুম বিল্লাহ, টিয়া পাখি প্রতীক নিয়ে আজিজুল হক ও চশমা প্রতীক নিয়ে মিজানুর রহমান প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। এ উপজেলায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী মারজাহান নিতু হাঁস প্রতীক নিয়ে, কাজল রেখা ফুটবল প্রতীক নিয়ে ও মনিরা খাতুন কলস প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে লড়ছেন।