নিজস্ব প্রতিবেদক:
তীব্র দাবদাহে চুয়াডাঙ্গা ও এর আশপাশের জেলায় কৃষি, মৎস ও প্রাণীসম্পদ ও জীবন জীবিকায় অন্তত ১৭৫৬ কোটি টাকা মূল্যের ক্ষতি হয়েছে। এর মধ্যে শুধু কৃষিখাতেই ক্ষতি হয়েছে ৩৬৩ কোটি টাকা। আর জীবন জীবিকার ওপর ক্ষতির পরিমাণ ১২০০ কোটি টাকা মূল্যের। সম্প্রতি একটি গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
চুয়াডাঙ্গায় দাবদাহের প্রভাব নিয়ে চালানো এক সমীক্ষা প্রতিবেদন সাংবাদিকদের কাছে উপস্থাপন করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ওয়েভ ফাউন্ডেশন। চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ ও কুষ্টিয়া জেলায় কৃষি-মৎস্য-প্রাণিসম্পদ, পরিবেশ ও জীবন-জীবিকার ওপর তীব্র তাপদাহের প্রভাব মূল্যায়ন বিষয়ক গবেষণা চালায় ওই সংস্থাটি। গতকাল বুধবার বেলা ১১টায় ওয়েভ ফাউন্ডেশেনের ট্রেনিং সেন্টারের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সমীক্ষার তথ্য উপস্থাপনে উল্লেখ করা হয়, তাপদাহের প্রভাবে চলতি বছর চুয়াডাঙ্গা জেলা ও পাশের তিন জেলায় কৃষিখাতে ৩৬২ কোটি ৬২ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া মৎস্য খাতে ৯৭ কোটি ৮৮ লাখ ও প্রাণিসম্পদ খাতে ৯৬ কোটি ৩৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। একইসাথে তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যহত থাকায় জীবন ও জীবিকার ওপরেও বড় প্রভাব পড়েছে। তাপদাহের কারণে কর্মঘণ্টা হ্রাস পাওয়ায় প্রতিদিন ৬১ কোটি ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৭৭৫ টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। ২০ দিনে জীবন জীবিকায় ১২২৬ কোটি ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার ৪৮৪ টাকার ক্ষতি হয়েছে। দিনে ৯ ঘণ্টার পরিবর্তে তীব্র গরমে কর্মঘণ্টা নেমে আসে ৬ ঘণ্টায়। এতে একজন মানুষের গড়ে প্রতিদিন ২৩৪ টাকা আয়ের ঘাটতি হয়।
সমীক্ষায় আরও উল্লেখ করা হয়, এ চারটি জেলার মধ্যে ১০টি উপজেলায় গবেষণা চালায় বেসরকারি ওই সংস্থাটি। গবেষণায় ৫৫ জন সরকারি কর্মকর্তা, অংসগঠিত দলের ২০ জন, দলীয় আলোচনায় ১০০ জন, ৫৪৫ জন দিনমজুর, রিক্সাচালক, পরিবহন শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, মৎসজীবী, ছোট ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবী এবং ৬ জন সিভিল সোসাইটি ও এনজিওকর্মীর কথা বলে এসব তথ্য সংগ্রহ করা হয়। একইসাথে সমীক্ষাপত্রে বেশ কিছু সুপারিশ ও করণীয় তুলে ধরা হয়েছে।
সমীক্ষার মূখ্য গবেষক ড. মোহা. হাসান আলী সংবাদ সম্মেলনে জানান, তীব্র তাপদাহের প্রভাবে আগামীতে এ অঞ্চলের মানুষের জীবনে ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে সমীক্ষা পরিচালনাকারী দলের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ওয়েভ ফাউন্ডেশন মূখ্য গবেষক ড. মোহা. হাসান আলী, সংগঠনে উপদেষ্টা আব্দুস শুকুর, উপ-পরিচালক জহির রায়হান, সহকারী পরিচালক কিতাব আলী ও জ্যেষ্ঠ সমন্বয়কারী আব্দুস সালাম ও কামরুজ্জামান যুদ্ধ।
এছাড়া সংবাদিকদের মধ্যে উন্মুক্ত আলোচনা সভায় অংশ নেন সরদার আল আমিন, রাজীব হাসান কচি, অ্যাড. মানিক আকবর, রিফাত রহমান, খাইরুজ্জামান সেতু, জিসান আহমেদ, মেহেরাব্বীন সানভী ও আজাদ হোসেন প্রমুখ।