#এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
# সারাদেশে পাশের হার ৮৩.০৪%
নিজস্ব প্রতিবেদক:
চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। গতকাল রবিবার বেলা ১১টার দিকে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফলাফল প্রকাশের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন। এ বছর ৯টি সাধারণ, মাদরাসা ও কারিগরি বোর্ডে গড় পাসের হার ৮৩.০৪ শতাংশ। এর আগে সকাল ১০টার দিকে বোর্ড চেয়ারম্যানদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ফলের অনুলিপি হস্তান্তর করে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
এবারের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফলে যশোর বোর্ডের অধীনে ১০ জেলার মধ্যে চুয়াডাঙ্গার অবস্থান অষ্টম। পাশের হার ৯০.৮২ শতাংশ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড যশোর এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর যশোর বোর্ডের অধীনে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৮ টি কেন্দ্রে ১৩৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১১ হাজার ১৪১ জন পরিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। এরমধ্যে ছাত্র ৫ হাজার ৩৭৩ জন ও ছাত্রী ৫ হাজার ৭৬৮ জন। পরীক্ষায় মোট নিয়মিত উপস্থিত ছিলো ১০ হাজার ৯৮৩জন পরীক্ষার্থী। পাশ করেছে ৯ হাজার ৯৭৫ জন পরিক্ষার্থী। পাশের মধ্যে ছাত্র ৪ হাজার ৭২৫ জন ও ছাত্রী ৫ হাজার ২৫০ জন।
এদিকে, ফলাফল ঘোষণার পর শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা লক্ষ্য করা গেছে। দীর্ঘ অপেক্ষার সন্তানদের ভালো ফলাফলে তারা বেশ খুশি। অভিভাবকরা জানায়, ছাত্র-ছাত্রীরা পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করাটা অত্যন্ত ইতিবাচক। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণেই শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা কার্যক্রমের গতিশীলতা ধরে রাখতে পেরেছে।
আমাদের জীবননগর অফিস জানিয়েছে:
জীবননগর উপজেলায় গড় পাসের হার ৮৪ দশমিক ৯৯ শতাংশ। এর মধ্যে জেনারেল থেকে পাসের হার ৮৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ। মাদ্রাসা বোর্ডে দাখিলে পাসের হার ৭৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ আর কারিগরিতে পাসের হার ৭৫ দশমিক ১০ শতাংশ। গতকাল রবিবার দুপুরে জীবননগর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস থেকে এ তথ্য জানানো হয়। ফলাফল থেকে জানা গেছে, এবার জীবননগরে এসএসসি-সমমানের পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে ২৩২ শিক্ষার্থী। এর মধ্যে জেনারেল থেকে পেয়েছে ১৯৯ জন। মাদ্রাসা থেকে ১১ জন এবং কারিগরি থেকে ২২ জন। প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, জেনারেলে এবার পাশের হারে এগিয়ে আলীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এ বছর এই বিদ্যালয় থেকে ২৬ জন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সবাই পাস করে। আর এ প্লাস পেয়েছে একজন। এরপরের অবস্থানে রয়েছে জীবননগর থানা মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয় থেকে পাস করেছে ৯৮ দশমিক ৬৫ শতাংশ শিক্ষার্থী। এদিকে সবচেয়ে বেশি ৪৬ শিক্ষার্থী এ প্লাস পেয়েছে শাপলাকলি আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। এ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় বসেছিল ১০৮ জন। আর ১৫৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৯ শিক্ষার্থী এ প্লাস পেয়েছে জীবননগর সরকারি থানা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। ৭৪ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জীবননগর থানা মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এ প্লাস পেয়েছে ৩৬ শিক্ষার্থী। আর হাসাদাহ বহুমূখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৯৮ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এপ্লাস পেয়েছে ২৬ জন। অপরদিকে সবচেয়ে বেশি অকৃতকার্য হয়েছে রায়পুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কাশিপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে। এদিকে মাদ্রাসার ফলাফলে এগিয়ে জীবননগর উপজেলা আলীম মাদ্রাসা। এ বছর এই মাদ্রাসা থেকে ৪১ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৩৮ জন। পাসের হার ৯২ দশমিক ৬৮ শতাংশ। অকৃতকার্য হয়েছে ৩ জন। আর সবচেয়ে বেশি অকৃতকার্য হয়েছে নিধিকুন্ড এবং হাসাদাহ ইসলামীয়া ফাজিল মাদ্রাসা থেকে। কারিগরি বোর্ডের অধীনে পরীক্ষা দিয়ে পাসের হারে এগিয়ে জীবননগর থানা মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয় থেকে ৬০ জন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫৪ জন। পাসের হার ৯০ শতাংশ। এ প্লাস পেয়েছে ৫ জন। এদিকে পাসের হারে পিছিয়ে উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয় থেকে কারিগরি বোর্ডে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পাস করেছে ৫৭ দশমিক ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয়ে শেষ হয় গত ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা ১৩ মার্চ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে অনুষ্ঠিত হয়। ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন এ বছর ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। সারা দেশের ৩ হাজার ৭০০ কেন্দ্রে ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ পরীক্ষায় অংশ নেয়। এর মধ্যে ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৬ লাখ ৬ হাজার ৮৭৯ জন। মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে দাখিল পরীক্ষার্থী মোট ২ লাখ ৪২ হাজার ৩১৪ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৭৩ জন।