আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গার মধুপুরে এক কিশোরী বধূর আত্মহত্যাকে পুঁজি করে আর্থিক লেনদেনের কথা চলছিল ক্যাম্প পুলিশ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে। কিন্তু স্থানীয় গ্রাম পুলিশের এক ফোনকল তাদের সব কৌশল ভেস্তে দেয়। লেনদেন ভেস্তে যাওয়ার ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত করে ওই গ্রাম পুলিশকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে জামজামি ক্যাম্প পুলিশের ক্ষুদ্ধ ইনচার্জ (এসআই) শরিয়তউল্লাহর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার গ্রাম পুলিশ জাফিরুলকে ডেকে নিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত ২৮ এপ্রিল রবিবার বিকেলে আলমডাঙ্গা উপজেলার মধুপুর গ্রামে স্বামী ইমনের বাড়িতে কিশোরী বধূ ইসমত আরা (১৭) আত্মহত্যা করেন। ইসমত আরা আত্মহত্যার পর জামজামি ক্যাম্পের আইসি এসআই শরিয়তউল্লাহ থানার ওসিকে আত্মহত্যার ঘটনা না জানিয়ে গোপনে আপোষরফার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ উঠে। এ চেষ্টায় মধুপুর গ্রামের আওয়ামীলীগের কয়েকজন নেতা যোগ দেন। কিন্ত ক্যাম্পের আইসি ও আওয়ামীলীগ নেতার অর্থনৈতিক সব আয়োজন ভন্ডুল করে দেয় স্থানীয় গ্রাম পুলিশ জাফিরুল। তিনি নিজের ডিউটি ভেবে নিয়মমাফিক আত্মহত্যার ঘটনা থানার ওসিকে মোবাইলফোনে রিং দিয়ে জানিয়ে দেন। খবর পেয়ে থানা পুুলিশ গভীর রাতে লাশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নেন। পরদিন সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। আর গ্রাম পুলিশের ওই এক মোবাইলফোনেই আইসির সব অর্থনৈতিক আয়োজন ভেস্তে যায়।
জাফিরুল জানান, এতে ক্যাম্পের আইসি ও স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতারা ভীষণ চটে যান তার ওপর। মঙ্গলবার রাতে মাঠের ভেতর এক ব্রীজের পাশে জাফিরুলকে ডেকে নেওয়া হয়। ‘‘তোর ওসি বাপকে কেন মোবাইল করেছিস? তোর ওসি বাপকে ডাক।’’ বলেই জাফিরুলকে বেধড়ক মারপিট করেন আইসি শরিয়তউল্লাহ। এসময় ক্যাম্পের কনস্টেবল আনোয়ারও জাফিরুলকে মারতে থাকেন।
নির্যাতিত গ্রাম পুলিশ জাফিরুল বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ইমনের স্ত্রী আত্মহত্যা করে। আমি ডিউটি মনে করে ওসিকে জানায়। এতেই আইসি রেগে গিয়ে তোর ওসি বাপকে ডাক বলেই আমাকে মারধর শুরু করেন। কনস্টেবল আনোয়ার আমার মোবাইলফোন কেড়ে নেন। এ ঘটনায় আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ ব্যাপারে জামজামী ক্যাম্পের আইসি শরিয়তউল্লাহ নিজের অপরাধ স্বীকার করে বলেন, ‘আত্মহত্যার ঘটনা গ্রাম পুলিশ জাফিরুল প্রথমে আমাকে না জানিয়ে ওসিকে জানান। এতে আমি রেগে গিয়ে একটু মারধর করেছি। পরে আমি ভুল বুঝতে পেরেছি।’ তিনি এই বিষয়টি পত্রিকায় নিউজ না করতেও সাংবাদিককে অনুরোধ করেন। আলমডাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ আব্দুল গণি জানান, এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত নই।