নিজস্ব প্রতিবেদক:
টানা প্রায় এক সপ্তাহ ধরে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হচ্ছে চুয়াডাঙ্গায়। জেলার ওপর দিয়ে তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। এ অবস্থায় জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। এরই মধ্যে আরও তিন দিনের হিট অ্যালার্ট জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
গতকাল সোমবারও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপমাত্রার পারদ ২ ডিগ্রি কমলেও গরমের অস্বস্তি কমেনি। বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হওয়া এবং জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে গরমের তীব্রতা অনুভূত হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন শিশু ও বৃদ্ধরা।
জেলা শহরের ভ্যানচালক মাসুম মিয়া ও লিয়াকত আলী বলেন, গত এক সপ্তাহে প্রচণ্ড গরমের কারণে যাত্রী কম পাচ্ছি। সন্ধ্যা ও রাতেও তেমন ভাড়া মিলছে না। দিনে গরম আর রাতে যাত্রী নেই। সংসার চালানোই দায়।
চুয়াডাঙ্গা শহরের শান্তিপাড়ার বাসিন্দা গৃহবধূ নিঝুম আক্তার বলেন, প্রচণ্ড গরম পড়েছে। বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। আমার সন্তান গত তিনদিন ধরে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভুগছে। জানি না কবে বৃষ্টির দেখা মিলবে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের পর্যবেক্ষক তহমিনা নাছরিন জানান, সোমবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গা, যশোর ও খুলনায় যৌথভাবে ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। আপাতত বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই। টানা বৃষ্টিপাত না হলে দিনের তাপমাত্রা আরও বাড়বে।
এদিকে, দেশে চলমান তাপপ্রবাহ সোমবার থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আবহাওয়াবিদ মো. বজলুর রশিদের সই করা সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়। জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বাড়তে পারে বলেও সতর্কবার্তায় উল্লেখ করা হয়। এর আগে গত ১৯ এপ্রিল হিট অ্যালার্ট দেয় আবহাওয়া অধিদপ্তর। সেখানে বলা হয়, ১৯ থেকে ২২ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত সময়ের জন্য এই অ্যালার্ট দেওয়া হয়। সবশেষ গতকাল এই অ্যালার্টের সময় বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল সকাল পর্যন্ত করা হলো। আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক বলেন, আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনায় চলমান হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। আমরা ধারণা করছি পুরো এপ্রিলজুড়েই এই তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি মে মাসেও তাপপ্রবাহ থাকতে পারে। পরবর্তী আবহাওয়া পরিস্থিতি বিবেচনা করে আবহাওয়া অধিদপ্তর এই হিট অ্যালার্টের মেয়াদ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেবে।