মুজিবনগর অফিস:
যারা ১৭ এপ্রিল পালন করে না তারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। তারাই এ সরকারকে উৎখাতের জন্য নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে আসছে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি বিএনপি-জামায়াত বিদেশী শক্তির উপর ভর করে দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা করেছিলো। আজ তারাই বিদেশী শক্তি বাদ নিজেরা শক্তি সঞ্চয়ের কথা বলছে। আজ ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননে শেখ হাসিনা মঞ্চে জনসভায় কথাগুলো বলেছেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এর আগে গতকাল বুধবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে মেহেরপুরের মুজিবনগর আম্রকাননে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবসের সূচনা করা হয়। সকাল ৯ টার দিকে মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পার্ঘের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারপর জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, কুচকাওয়াজ, গীতিনাট্যেও আয়োজন করা হয়। সকাল ১০ টায় শেখ হাসিনা মঞ্চে শুরু হয় জনসভা। প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরুল্লাহ, সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ.ফ.ম বাহাউদ্দীন নাছিম। এ সময় বক্তারা বিএনপি জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, যারা মুজিবনগর দিবস পালন করেনা তারা স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি। তারাই বিভিন্ন সময়ে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাজী জাফর উল্লাহ বলেন, মুজিবনগর দিবস ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তবে অত্যন্ত দুঃখের বিষয় দিবসটি পালনে দেশব্যাপী আগের মত কোন উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তাই আগামি বছর থেকে সারা দেশের জেলা উপজেলা পর্যায়ে দিবসটি পালনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বিএনপি-জামায়াতকে ইঙ্গিত করে বলেন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে যারা সম্প্রদায়িক শক্তির হাতে সপে দিতে চায়, তাদের প্রতিরোধ করাই হউক আজকের মুজিবনগর দিবসের শপথ।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যেই আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করে বলেন, পচাত্তর পরবর্তী পরিস্থিতি সৃষ্টি করে বিএনপি ও তাদের দেশী বিদেশী দোসররা মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে।
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রথম সরকারের স্বরাষ্ট্র, কৃষি ও পুনর্বাসন মন্ত্রী এ এইচ এম কামরুজ্জামানের পুত্র রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন মেয়র খাইরুজ্জামান লিটন, প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজ উদ্দীন আহম্মেদের কন্যা মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন রিমি, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন, জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন প্রমুখ।
সভায় বিশেষ বক্তা ছিলেন মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনের সংসদ সদস্য ডাঃ আবু সালেহ মোহাম্মদ নাজমুল হক সাগর, জেলা আ’লীগ সাধারণ সম্পাদক এমএ খালেক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নুর লিপি, অ্যাড. আমিরুল আলম মিলন, পারভীন জামান কল্পনা ও নির্মল কুমার চ্যাটার্জি। উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃববৃন্দ। এর আগে সকাল সাড়ে নয়টায় মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রী, সরকারি কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে জাতীয় ও দলীয় পকাতা উত্তোলন করেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। এর পরে গার্ড অব অনার এবং কুজকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়। পুলিশ, বিজিবি, আনছার, বিএনসিসি, গালর্স গাইড ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের কুজকাওয়াজ মুগ্ধ করে উপস্থিত হাজারো মানুষকে।
দ্বিতীয় পর্বে শেখ হাসিনা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এ আলোচনা সভা। আলোচনা সভা শেষে বাংলাদেশ আনছার-ভিডিপি অর্কেষ্ট্রা দল ‘‘সোনালী স্বপ্রের দেশ’ নামের গীতিনাট্য পরিবেশেন করেন। যেখানে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরা হয়।
এদিকে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় ও মেহেরপুর জেলা প্রশাসন যৌথভাবে জাকজমকপূর্ণ আয়োজন করে। আগের দিন থেকেই নানা রং বেরংয়ের ফেস্টুন, তোরণ স্থাপণ, রং এবং আলোক সজ্জা করা হয় গোটা মুজিবনগর কমপ্লেক্সজুড়ে। সন্ধ্যায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন দেশের প্রসিদ্ধ শিল্পিরা।