নিজস্ব প্রতিবেদক:
দীর্ঘ আড়াই বছর পর চুয়াডাঙ্গায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিনে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা বা বহিষ্কারের খবর পাওয়া যায়নি। যানজট এড়াতে এবছর এক ঘণ্টা পিছিয়ে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত পরীক্ষার সময় নির্ধারণ করা হয়। তবে প্রথম দিনেই চুয়াডাঙ্গা জেলার চার উপজেলায় মোট ২৩৩ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল বলে জানা গেছে। প্রশ্নফাঁস রোধ ও পরীক্ষা নকলমুক্ত রাখতে কেন্দ্রগুলোর প্রতিটি কক্ষে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনসহ কর্তৃপক্ষ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, প্রথম দিনের পরীক্ষায় জেলার মোট ১৩ হাজার ৪১৬ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৩ হাজার ১৮৩ জন অংশ নিয়েছে। বাকি ২৩৩ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। এর মধ্যে এসএসসি (সাধারণ) বাংলা প্রথমপত্র বিষয়ের পরীক্ষায় মোট ১০ হাজার ৬৪৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিতির সংখ্যা ছিল ১০ হাজার ৪৮২ জন। অনুপস্থিত ১৬১ জন। এসএসসি ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় মোট ১ হাজার ৭৯২ পরীক্ষার্থীর মধ্যে উপস্থিত ছিল ১ হাজার ৭৬২ জন। অনুপস্থিত ৩০ জন। দাখিল পরীক্ষায় ৯৮১ জনের মধ্যে উপস্থিত ছিল ৯৩৯ জন। অনুপস্থিত ৪২ জন।
এদিকে, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিন থেকেই কেন্দ্রগুলোতে ছিল কড়া নিরাপত্তা। যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা, অনিয়ম এড়াতে এবং প্রশ্নফাঁস রোধে সার্বক্ষণিক চারটি ভিজিলেন্সটিম, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট ও পুলিশ সদস্যরা মাঠে ছিলেন। সকাল সাড়ে ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা ভি. জে সরকারি উচ্চবিদ্যালয় ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। এ সময় তিনি জানান, পরিক্ষা সুষ্ঠ পরিবেশে গ্রহণ করা হচ্ছে। কেন্দ্রে কেন্দ্রে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ দায়িত্বে আছে। নকলমুক্ত পরিবেশে গ্রহণ করা হচ্ছে।
জীববনগর অফিস জানিয়েছে: জীবননগর উপজেলার ৯টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রথম দিনে ৪৫ জন অনুপস্থিত ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা থেকে পরীক্ষা শুরু হয়। জীবননগর উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, জীবননগর উপজেলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ভোকেশনাল ও মাদ্রাসা থেকে ২ হাজার ১৯৯ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা থাকলেও অনুপস্থিত ছিলেন ৪৫ জন শিক্ষার্থী। জীবননগর থানা মডেল পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষাথী ছিল ২১৩ জন অনুপস্থিত ছিল ২ জন, জীবননগর থানা সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ২৪৮ জন অনুপস্থিত ছিল ২জন, আন্দুলবাড়িয়া বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ৩৮২ জন, অনুপস্থিত ছিল ৯জন, উথলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ২১৯ জন অনুপস্থিত ছিল ২জন, মনোহরপুর বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ২১৪ জন, অনুপস্থিত ছিল ৫জন, হাসাদহ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ২৫৯ জন, অনুপস্থিত ছিল ৫ জন, ভোকেশনাল বিভাগে জীবননগর থানা পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ২৪৬ জন, অনুপস্থিত ছিল ৪ জন, জীবননগর থানা সরকারি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে পরীক্ষার্থী ছিল ১৮৫ জন, অনুপস্থিত ছিল ৫ জন এবং উপজেলা আলিম মাদরাসায় পরীক্ষার্থী ছিল ২৩৩ জন অনুপস্থিত ছিল ১১ জন পরীক্ষার্থী।
জীবননগর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দ্বিনেশ চন্দ্র পাল বলেন, জীবননগর উপজেলা থেকে এবার ২ হাজার ১৫৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। পরীক্ষা নকলমুক্ত রাখতে প্রশাসন কাজ করছে। জীবননগর উপজেলা নিবাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম বলেন, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যাতে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে এ জন্য প্রশাসনিক ভাবে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
আলমডাঙ্গা অফিস জানিয়েছে: সারাদেশের মতো আলমডাঙ্গা উপজেলায় এসএসসি-বাংলা, ভোকেশনাল-বাংলা-২ এবং দাখিল কুরআন মাজিদ ও তাজভিদ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দীর্ঘ বিরতির পর গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় পরীক্ষা শুরু হয়ে ১টায় শেষ হয়। বেলা সাড়ে ১১টায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আরাফাত রহমান, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর, জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) রেজওয়ানা নাহিদ পরীক্ষার কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারী ও একাডেমি সুপার ভাইজার ইমরুল হক। আলমডাঙ্গা পাইলট বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্র ও সরকারি কলেজ উপকেন্দ্রে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১ হাজার ৪ শ ২৬ জন। এর মধ্যে দুই কেন্দ্র মিলে অনুপস্থিত ছিলেন ১৮ জন শিক্ষার্থী। আলমডাঙ্গা পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিলেন ৫শ ৫১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ১২ জন। আলমডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জ একাডেমি ও মুন্সিগঞ্জ বালিকা বিদ্যালয় উপকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিলেন ৬শ ৬৪ জন। এর মধ্যে দুই কেন্দ্র মিলে অনুপস্থিত ছিলেন ৮ জন শিক্ষার্থী। আলমডাঙ্গা হাটবোয়ালিয়া স্কুল এন্ড কলেজ কেন্দ্র ও হাটবোয়ালিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় উপকেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিলেন ৭ শ ৪১ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দুই কেন্দ্র মিলে অনুপস্থিত ছিলেন ৯ জন শিক্ষার্থী। আলমডাঙ্গা সিদ্দিকীয়া আলিম মাদ্রাসায় দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষার্থী ছিলেন ২শ ৩৬ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ৭ জন শিক্ষার্থী। আলমডাঙ্গা পাইলট সরকারি উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের উপকেন্দ্র মহিলা ডিগ্রী কলেজ কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষার্থী ছিলেন ৩শ ১৫ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে অনুপস্থিত ছিলেন ৮ জন শিক্ষার্থী। আলমডাঙ্গা হারদী নিপ্পনজোহা টেকনিক্যাল স্কুল কেন্দ্রে ভোকেশনাল পরীক্ষার্থী ছিলেন ৫৬ জন শিক্ষার্থী।