জীবননগর অফিস:
টিসিবির পণ্য আত্মসাতের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে তিন সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তাকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়। গ্রেফতার আব্দুর রশিদ উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং সদস্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাবীদ হাসান বলেন, সাংবাদিকের ওপর হামলায় ঘটনায় সাংবাদিক মিঠুন মাহমুদ থানায় লিখিত অভিযোগ করেছিল। পরে সেটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। অভিযান চালিয়ে মামলার প্রধান আসামি আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে তোলা হলে বিজ্ঞ আদালত আসামীকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে, এ ঘটনায় গতকাল শুক্রবার সকালে জীবননগর সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে সাংবাদিকদের জরুরি সভা থেকে সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ইউপি সদস্য হামলাকারী আব্দুর রশিদসহ জড়িত সকলের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানানো হয়। এদিকে, গতকাল শুক্রবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ আব্দুর রশিদ মেম্বারের বাড়িতে সরেজমিনে তদন্ত করেন।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার বিকালে মাইটিভি ও দৈনিক সময়ের সমীকরণের প্রতিনিধি মিঠুন মাহমুদ, দৈনিক খোলা কাগজের প্রতিনিধি আজিজুর রহমান ডাবলু, গ্রামের কাগজের তুহিনুজ্জামান তুহিন গোপন সূত্রে জানতে পারে মনোহরপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য ও মৃত ফকির চাঁদের ছেলে আব্দুর রশিদ দীর্ঘদিন ধরে গোপনে কৌশল অবলম্বন করে অন্য মানুষের ভুয়া নাম ব্যবহার করে টিসিবির কার্ড তৈরি করে টিসিবির পণ্য আত্মসাৎ করছেন। তিনি সম্প্রতি বেশ কয়েকজনের টিসিবির পণ্য তুলে বাড়ি নিয়ে গেছেন। এমন তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে যান সাংবাদিকরা। সাংবাদিকদের জিজ্ঞাসার একপর্যায়ে আব্দুর রশিদের স্ত্রী বলেন, তার স্বামী টিসিবির পণ্য রান্না ঘরে এনে রেখেছেন। সেখানে টিসিবির দুই বস্তা চাল আর কিছু টিসিবির তেল দেখতে পান তারা। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে ইউপি সদস্য আব্দুর ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগালি করতে থাকেন। একপর্যায়ে আব্দুর রশিদ ও তার ভাই তরিকুল ইসলাম তরির নেতৃত্বে আব্দুর রশিদের ছেলে আমির হামজা অঙ্কন, মৃত মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে হাসিবুর রহমান সুমনসহ আরও ৪-৫ জন তাদের ওপর হামলা করেন। এসময় সাংবাদিকদের কাছ থেকে ক্যামেরা ভাঙচুর করে। পরে হামলার শিকার সাংবাদিক মিঠুন মাহমুদ জীবননগর থানায় একটি মামলা দায়ের করলে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান আসামি আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
জীবননগর সাংবাদিক সমিতির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম (মেজো বাবু) ও জীবননগর প্রেসক্লাবের সভাপতি মুন্সী মাহবুবুর রহমান বাবু জীবননগরে সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার সাথে জড়িত ইউপি সদস্য আব্দুর রশিদকে গ্রেফতার করায় জীবননগর সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে জীবননগর থানা পুলিশকে সাধুবাদ জানান।