নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় নাশকতা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ জন নেতা-কর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নিম্ন আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন তারা। এসময় তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার। তবে তিন নেতা-কর্মীকে জামিন দেন আদালত। এদিকে, বিএনপি-জামায়াতের ৬৮ জন নেতা-কর্মী আদালত প্রাঙ্গণে এলেও হাজিরা না দিয়েই চলে যান তারা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাশকতা মামলায় হাইকোর্ট থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিনে ছিলেন বিএনপি-জামায়াতের এ নেতা-কর্মীরা। আগামী রোববার (৩১ মার্চ) তাদের আগাম জামিনের মেয়াদ শেষ হবে। তার আগে গতকাল বৃহস্পতিবার ১০৭ জন নেতা-কর্মী চুয়াডাঙ্গা জেলা জজ আদালতে হাজির হয়ে পুনরায় জামিন আবেদন করেন। এসময় জেলা ও দায়রা জজ মো. জিয়া হায়দার এদের মধ্যে তিনজনকে জামিন ও বাকি ৪৭ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তবে ৬৮ জন নেতা-কর্মী আদালতে হাজিরা না দিয়ে চলে যান।
চুয়াডাঙ্গা কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক নাসির উদ্দিন মৃধা জানান, দামুড়হুদা, দর্শনা ও জীবননগর থানার ২০২৩ সালের নাশকতার মামলার আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন নেন। উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে নিম্ন আদালত থেকে স্থায়ী জামিনের জন্য আত্মসমর্পণ করেন বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল, কৃষকদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও জামায়াতের ১১৮ নেতাকর্মী। বিচারক ৪৭ জন আসামির জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন। অন্য ৩ জনের জামিন মঞ্জুর করেন বিচারক। এসময় বাকি আরও ৬৮ জন নেতাকর্মী জামিন নামঞ্জুর শুনে হাজিরা না দিয়েই আদালত প্রাঙ্গণ ত্যাগ করেন।
চুয়াডাঙ্গা জেলা জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সাধারণ সম্পাদক সেলিমুল হাবিব বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও জীবননগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান কবির, দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ইউসুফ আলী, জুড়ানপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিনসহ ৪৭ নেতা-কর্মীকে জামিন নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়েছেন। এ সময় জামিন নিতে আসা ৬৮ জন নেতা-কর্মী আদালত থেকে পালিয়ে যান। তারা ঈদের পর আত্মসমর্পণ করবেন বলে জেনেছি।
জেলা জজ কোর্টের পাবলিন প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. বেলাল হোসেন জানান, নাশকতার মামলায় ৫০ আসামি হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। এ মামলায় আরও যারা আসামি আছেন তাদের হাজির হওয়ার সময় ৩১ মার্চ পর্যন্ত আছে। এর মধ্যে যদি তারা হাজির না হন, তাহলে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হবে।
বিএনপিপন্থি আইনজীবী অ্যাড. শাহজাহান মুকুল জানান, তারা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব শরীফুজ্জামান শরীফের অভিযোগ, তারা প্রকৃত ন্যায়বিচার পাননি। আদালত ফরমায়েশিভাবে নেতা-কর্মীদের কারাগারে পাঠিয়েছে।