নিজস্ব প্রতিবেদক:
মৃত্যুর ২০ দিন পর দেশে এলো চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার সদাবরী গ্রামের আবু বক্করের মরদেহ। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টার দিকে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় তার মরদেহ। এরপর ঢাকা থেকে অ্যাম্বুলেন্সে যোগে বিকাল ৩ টার দিকে তার মরদেহ নিজ গ্রাম সদাবরীতে পৌঁছায়। মৃত্যু আবু বক্কর দামুড়হুদা উপজেলার কুড়ুলগাছি ইউনিয়নের সদাবরী গ্রামের ঈদগাহ পাড়ার সওদার মন্ডলের বড় ছেলে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, জীবিকার তাগিদে ২০০৯ সালে পরিবারে সচ্ছলতা ফেরাতে কাজের সন্ধানে দুবাই পাড়ি জমাই আবু বক্কর (৩২)। পরে দুবাই থেকে ওমান এরপর দালালের মাধ্যমে অবৈধপথে তুরষ্ক, গ্রীস হয়ে সব শেষ দালালের মাধ্যমে পাড়ি জমাই স্বপ্নের দেশ ইতালিতে। কিন্তু অবৈধ অবস্থায় প্রায় দুই বছর বেকার জীবনযাপনের মাঝেই গত ২৯ ফেব্রুয়ারী তার লাশ উদ্ধার করেছে ইতালি পুলিশ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৯ জানুয়ারী) রাতে দেশটির রাজধানী রোমের অস্ট্রিয়া এলাকার একটি পার্কে বক্করের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। মৃত আবু বক্কর চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়নের সদাবরি গ্রামের ঈদগা পাড়ার সওদাগর মন্ডলের ছেলে। প্রাথমিকভাবে এটিকে ‘হতাশাজনিত আত্মহত্যা’ বলে ধারণা করা হলেও রহস্য উদঘাটনে তদন্ত করছে স্থানীয় প্রশাসন।
দীর্ঘদিন পিতা মাতা ভাই বোন ফেলে বিদেশের মাটি বসবাস করে আসছে সংসারের কথা চিন্তা করে এ বছর ছুটিতে বাড়ি ফিরে বিবাহ করার কথা ছিলো। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে বাড়ি ফেরা হলো না বক্করের। ফিরলেন লাশ হয়ে।
গত ১লা মার্চ বাংলাদেশ সময় সকাল ৮ টার দিকে ইটালি থেকে ফোন আসে আবু বক্কর আত্মহত্যা করেছে। এমন খবরে শোকের ছায়া নেমে আসে পরিবারে।
এদিকে, দীর্ঘ ২০ দিন পর বক্করের মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য সৃষ্টি হয়। পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে গ্রামের পরিবেশ ভারি হয়ে উঠে।
বাবা সওদার বলেন, আমার ছেলে দীর্ঘ ১৪ বছর আগে বিদেশে যায়। একটি ফার্মে কাজ করতেন। গত ১ মার্চ সকাল ৮ টার দিকে ওই দেশে থাকা ছেলের বাংলাদেশি সহকর্মীরা ফোন করে তার মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের জানায়। ছেলের মুখটি দেখার জন্য দীর্ঘ ২০ দিন আমরা অপেক্ষায় ছিলাম। ছেলের মুখটি দেখতে পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানায়।
গত বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে সদাবরী নিজ গ্রামের কবরস্থানে আবু বক্করকে নামাজের জানাজা শেষে দাফন করা হয়।