শেখ লিটন:
রমজান মাসে অস্বস্তি বাড়ছেই নিত্যপন্যের বাজারে। প্রতিনিয়ত সব ধরনের খাদ্য পণ্য চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রথম রোজা থেকে দাম বেড়েছে মাছ-মাংস সব ধরনের ডাল মসলা ও প্যাকেটজাত পণ্যের। এরই মধ্যে বেড়েছে কিছু সবজির দামও। রোজার মাসের বাকি দিনগুলোতেও কোন সুখবর বাজারে। আগে থেকেই বাড়ছিল বিভিন্ন পণ্যের দাম। এর মধ্যে রোজা এসে যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আবারও গরুর মাংসের বাজার লাগামহীন হয়ে পড়েছে। রমজানের প্রথম দিন থেকেই চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজারে কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়ে গরুর মাংস বিক্রি করা হচ্ছে ৭০০ টাকা দরে। আর অন্যান্য সব বাজারে গরুর মাংস ৭৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে। মাংসের দাম বাড়ানোর পিছনে আছে বিক্রেতাদের বিভিন্ন যুক্তি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, হাটে গরুর দাম বেশি তাই বাজারেও মাংসের দাম চড়া। একইভাবে খাসির মাংসও ১ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
এদিকে গতকাল শুক্রবার মাছের বাজারে সরবরাহ ভালো ছিল। তাও সব ধরনের মাছ কেজিতে ৩০ টাকা বাড়তি। রোজার মাস তাই দাম বাড়তি ব্রয়লার, সোনালি, প্যারিস ও দেশি মুরগির। এই আমিষ পণ্য কেজিতে ৪০ টাকা বেড়েছে। যা সাধারণ ক্রেতাদের কাছে চরম কষ্টের-দুর্ভোগের।
এদিকে স্বস্তি ফিরেছে লিটার ও লুজ সয়াবিন তেলের দামে। তবে অস্বস্তি রয়ে গেছে মসলাসহ সব ধরনের প্যাকেটজাত পণ্যে। বেড়েছে অন্তত ৪ টাকা। সব ধরনের ডালের দামে কেজিতে ৫-৭ টাকা বাড়তি হয়েছে রোজার মাসে।
রোজার মাস তাই তুলনামুলক হারে সবজির দামও বাড়তি। এর মধ্যে মোটা সাইজের সজনের ডাটা কেজিতে ৪০০ টাকা আর ছোট সাইজের সজনের ডাটা ৩০০ টাকা। একশো লেবু ৬০০ টাকা। যা খুচরা পর্যায়ে বিক্রি করা হচ্ছে ১০ টাকা হালি দরে। দাম কমেছে পেঁয়াজ-কাঁচাঝাল ও আদা-রসুনে। তবে এখনো দাম স্বাভাবিক হয়নি শসার বাজার। কেজিতে এখনো শসার দাম ৭০ টাকা।
এভাবে দাম বাড়তে থাকলে প্রতিনিয়ত সাধারণ ভোক্তারা জিম্মি হয়ে পড়ছে। রোজার মাসে খাদ্যপণ্যের প্রয়োজন বেশি হয়। কিন্তু এ সময়টিতে এভাবে দামের আগুন থাকলে রোজাদারদের জন্য অস্বস্তিকর পরিস্থিতি।
বাজারে আসা এক ক্রেতা ফরিদ জোয়ার্দ্দার বলেন, রোজার মাসে জিনিসের প্রয়োজন বেশি লাগে। কিন্তু রোজার আগে জিনিসের দাম এক ছিল। আজ দেখছি বাজারের আরেক দাম। রোজার মাসে বাজারের মাছ ও মাংসের দামটা যদি স্বাভাবিক হয়। তাহলে সবার জন্য ভালো হতো। অন্যাবারের তুলনায় রোজার মাসটা বাজারটা ঠিকঠাক দাম থাকলে সবার জন্য ভালো হবে বলে মনে করি।
আরেক ক্রেতা হাসান আলী বলেন, বাজারে এসেছিলাম গরুর মাংস কিনতে আর সবজির কিনতে। কিন্তু গরুর মাংস সবজি ও মুরগির মাংসের দামটাও বেশি। সব জিনিসের দাম যদি এই ভাবে বেশি থাকে তাহলে রোজার মাস পার করা কঠিন।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা মার্কেটিং অফিসার সহিদুল ইসলাম বলেন, এখন বাজার স্বাভাবিক রাখতে নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে। বাজার যেন রোজার মাসটা স্বাভাবিক থাকে সেজন্য অভিযান করা হচ্ছে। আর বাজারে এখন পেঁয়াজের দাম কম। তবে মাংসের দাম বেশি। এ ব্যাপারে প্রশাসন থেকে আলোচনা চলছে। অচিরেই মাংস সহ সব জিনিসের দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসা হবে। আশা করছি বাকি যে পণ্য গুলোর দাম বাড়তি সেটাও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে নিয়ে আসা হবে।