নিজস্ব প্রতিবেদক:
গেল কয়েকদিনের হালকা ও ভারি বর্ষণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। তিনদিনের টানা বৃষ্টিপাতে জেলা শহরের বেশি কিছু এলাকায় এ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় শ্রমজীবী ও কর্মজীবী মানুষরা পড়েছেন চরম বিপাকে। শহরে লোকজনের চলাচল ছিল তুলনামুলক কম। অপরদিকে গতকালের বর্ষণে শহরের কবরী রোডের একটি গাছ প্রাইভেট কারের ওপর ভেঙে পড়েছে। তবে এসময় কেউ হতাহত হয়নি। গতকাল জেলায় ১৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এদিন বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার।
শহরের পৌরসভা মোড়, মাঝেরপাড়া, একাডেমী মোড়, গুলশানপাড়া, শান্তিপাড়া, বুজরুকগড়গড়ি, হাসপাতাল এলাকা, দৌলতদিয়াড়, রেল বাজার এলাকায় অতিবৃষ্টির ফলে জলাবদ্ধতা দেখা গেছে।
ওই সব এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মঙ্গলবার ভোররাত থেকে দুপুর পর্যন্ত টানা বৃষ্টির ফলে বাসাবাড়ি ও সড়কে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। কয়েকটি সড়কে এখনো জলাবদ্ধতা রয়েছে। নিচু এলাকার বাসা বাড়িতেও ঢুকে পড়ছে পানি।
ভুক্তভোগী একাধিক ব্যক্তি বলেন, ভোর থেকে জলাবদ্ধতায় বিপাকে পড়েন নগরের নিচু এলাকার বাসিন্দারা। ভোগান্তি কম ছিল না ব্যবসায়ীদেরও। সড়কে চলাচলে বেশ বেগ পেতে হয়।
পৌর এলাকার ২ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা সিরাজুল ইসলাম বলেন, মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে শান্তি পাড়া এলাকায় পানি জমতে থাকে। অনেক বাসাবাড়ি ও দোকানে পানি ওঠে। দুপুরের পর বিভিন্ন এলাকার পানি নেমে গেলেও শান্তি পাড়ার রাস্তার পানি নিস্কাশন হয়নি। সামান্য বৃষ্টি হলেই এ এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। অথচ এর কোনো সমাধান পৌর কর্তৃপক্ষ করছে না। এ অবস্থায় স্থানীয় মানুষের ভোগান্তি দূর হচ্ছে না।
শহরের ৯নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা রফিক রেজা বলেন, টানা বৃষ্টিতে গুলশানপাড়া ও হাসপাতাল এলাকার বিভিন্ন সড়ক ডুবে গেছে। এলাকায় কিছু বাসার ভেতরে পানি প্রবেশ করে।
এদিকে টানা বৃষ্টির পানিতে শহরের অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ড্রেনের নোংরা পানির সঙ্গে বৃষ্টির পানি মিশে অনেক এলাকার মানুষের ভোগান্তি বেড়েছে।
শহরে জলাবদ্ধতার বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নিস্কাশনের সুবিধা না থাকায় পানি নামতে সময় লাগে। এ কারণে অনেক এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে কোনো এলাকায় ড্রেনের ময়লা-আবর্জনার কারণে যাতে পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্ত না হয় সেজন্য পৌরসভার পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা কাজ করছেন।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানান, গতকাল জেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৬ মিলিমিটার। আর বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৫ কিলোমিটার। এদিন আকাশে মেঘ ছিল। এরকম আবহাওয়া আরও কয়দিন অব্যহত থাকতে পারে।