নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভৌত বিজ্ঞানের সহকারী শিক্ষক রাশেদুল হক কর্মস্থলে থাকেন না প্রায় সময়ই। বিদ্যালয়ে উপস্থিত না হয়ে তিনি ঢাকায় ব্যক্তিগত প্রাইভেট কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করেন তিনি। অথচ তার কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার নেতিবাচক পড়ছে ওই বিদ্যালয়ের প্রায় ৬শ’ শিক্ষার্থীর ওপর।
জানা গেছে, রাশেদুল হক ২০২২ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে। (সহকারী শিক্ষক রাশেদুলের ইনডেক্স নম্বর ঘ৫৬৮২৬৭৬৬ এনটিআরসি রোল নাম্বার ৩১৯০৫০৩৯ রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ২০১৩৯৩৭৪৩৯।) শুরু থেকেই তিনি ছিলেন দায়িত্বজ্ঞানহীন। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তার নাটকীয় আচরণের মাধ্যমে ম্যানেজিং কমিটি ও সহকর্মীদের মন জয় করেন। এই সুযোগে বিদ্যালয়ের নানা বিষয়ে অনিয়ম শুরু করেন। শিক্ষার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার ক্রমে বাড়তে থাকে। যদিও শিক্ষক রাশেদুল হকের চাকরি এমপিও হওয়ার আগ পর্যন্ত নাটকীয় আচরণ চালিয়ে যান।
চলতি বছরের জুলাই মাস থেকে রাশেদুল হকের চাকরি এমপিও হলে তার আচরণের পরিবর্তন ঘটতে থাকে। তিনি তার সহকর্মীদের সাথেও দুর্ব্যবহার করতে থাকে। ১ই আগস্ট থেকে ৩০ই আগস্ট পর্যন্ত তিনি বিদ্যালয় অনুপস্থিত কোন ছুটি বা নোটিশ ছাড়াই। তিনি সকল নিয়ম-কানুন অমান্য করে তার ব্যক্তিগত কোচিং সেন্টার চালানোর জন্য ঢাকায় অবস্থান করেন মাসের পর মাস। প্রধান শিক্ষকসহ সহকর্মীরা তার কাছে বিদ্যালয়ে আসার জন্য ফোন করলে তিনি বলেন ‘আমি প্রতিমাসে কোচিং ব্যবসা থেকে এক লাখ টাকা আয় করি।’
গেল ২৯ আগস্ট বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে তিনি বিদ্যালয়ে নিয়মিত হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তিনি তার পরদিন থেকেই আবারও নিরুদ্দেশ ওই শিক্ষক।
এ বিষয়ে সহকারী জেলা শিক্ষা অফিসার মুতাসিম বিল্লাহ বিদ্যালয়টি পরির্দশনও করেন। সেসময় তিনি বলেন, শিক্ষক রাশেদুল হক যদি কর্মস্থলে যোগদান না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জেলা শিক্ষা অফিসের নির্দেশনা মোতাবেক জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সমন্বয়ের রাশেদুল হককে কারণ দর্শানোর নোটিশও দেয়া হয়।
জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শিক্ষক রাশেদুল প্রতিটি শিক্ষকের সাথে দুর্ব্যবহার করে আসছেন। বিনা নোটিশে কিংবা বিনা ছুটিতে কর্মস্থল থেকে বিরত থাকছে। তিনি ঢাকায় একটি কোচিং সেন্টার পরিচালনা করেন। যার জন্য স্কুলে আসেন না। অথচ মাঝে মাঝে এসে হাজিরা দিয়ে চাকরি টিকিয়ে রেখেছেন।
জয়রামপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বলেন, কর্মস্থলে নিয়মিত হতে ২৯ শে আগস্ট তাকে কঠোরভাবে বলা হয়। কিন্তু তার পরদিন থেকেই আবারও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত তিনি।
সহকারি শিক্ষক রাশেদুলের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি ফোনকল রিসিভ করেননি।