শেখ লিটন:
চুয়াডাঙ্গার বাজারে মাছ-মাংসে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও ঝাঁঝ বাড়ছে পেঁয়াজের বাজারে। প্রতি কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে পাইকারি পর্যায়ে ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। খুচরা পর্যায়ে যার দাম আরও বেশি। এদিকে, মাংস বিক্রি হচ্ছে পৌরসভার বেঁধে দেয়া নির্ধারিত দামে। একইসাথে কাঁচা সবজির দামও রয়েছে কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে।
গতকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গা শহরের নিচের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দফা দাম বাড়ার পর চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা থেকে নির্ধারন করে দেয়া হয় গরুর মাংস ও ছাগলের মাংসের দাম। সেখানে গরুর মাংস ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা কেজিতে বিক্রির কথা উল্লেখ করা হয়। আর খাসির মাংসের দাম কেজিতে নিতে হবে ৯০০ টাকা। গত কয়েক সপ্তাহে মাংসের বাজার নিয়ন্ত্রনহীন থাকলেও গতকাল নির্ধারিত দামে মাংস বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে খাসির মাংস ৯৫০ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। এদিকে গত এক সপ্তাহে পেঁয়াজের ঝাঁঝ আরো বেড়েছে। পাইকারি পর্যায়ে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকা কেজি আর খুচরা পর্যায়ে তা বিক্রি করা হচ্ছে কেজিতে ১২০ টাকায়। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বাড়া নিয়ে ব্যবসায়িরা জানান, বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ কম তাই দাম বেশি।
তবে দাম কমেছে কাঁচা মরিচ ও রসুনের। আর অন্যান্য সব ধরনের কাঁচা সবজির দাম রয়েছে আগের মতোই। ফলে কিছুটা নাগালে সবজির বাজার। চুয়াডাঙ্গা নিচের বাজারে মাছের সরবরাহ তুলনামূলক কম। তাই সব ধরনের মাছ কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে। নিম্ন আয়ের মানুষের আমিষের প্রধান খাদ্য পন্য ব্রয়লার মুরগি। এই আমিষে কেজিতে এক সপ্তাহের ব্যাবধানে ২০ বেড়ে ২২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে দাম কমেছে সোনলি ও লেয়ার মুরগির। দাম বেড়েছে প্যারিস মুরগির, কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে ৪৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে ডিম। এক খাচি ডিম এখন বাজারে ৩৩০ টাকা। আর রোজার পন্যের মধ্যে কোনভাবেই কমছে না তেল ও ডালের দাম। বিভিন্ন রকমের ডাল কেজিতে ৩০ টাকা বাড়তি। সয়াবিন তেলের লিটার ১৭২ টাকা নেয়া হচ্ছে। আর অন্যান্য নিত্যপন্যের দাম ওঠা-নামা করছে। তবে কেজি প্রতি কমেছে চাল ও আটার দাম।
বাজারে আসা এক ক্রেতা ফরিদ হোসেন বলেন, মাংসের বাজার এক রকম আছে। আর পেঁয়াজের দাম বাড়তি। সামনে রোজার মাস আসছে তার আগেই সব জিনিসের দাম বেশি। বিশেষ করে আমিষের দাম কমলে খুবই ভালো হতো। বাজার মনিটরিং ও ভ্রাম্যমাণ অভিযান বাড়ালে বাজারের এই মাংসের দাম আরো কমবে। রোজার পণ্যের কিছুটা দাম সহনীয় হবে বলে মনে করি।
আরেক ক্রেতা রমজেত মিয়া বলেন, সবজির দাম কম হলেও সেই তো চুয়াডাঙ্গার উৎপাদন। তাও ৫০ টাকার নিচে তো কোনো সবজি নেই। মুরগির দাম মাছের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এই ভাবে বাড়তে থাকলে বাজারে আসার উপায় নেই। ডালের দাম ১৫ দিন ধরেই একই দামে কিনে যাচ্ছি।
এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিপ্তারের সহকারি পরিচালক সজল আহম্মেদ বলেন, চুয়াডাঙ্গায় মাংসের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি নিচ্ছে বলে জেনেছি। তাই এই সপ্তাহের মধ্যে মাছ-মাংসের বাজার স্থিতিশীল করার জন্য অভিযান চালানো হবে। আর অন্যান্য জিনিসের দাম কেমন নিচ্ছে সেটাই তদারকি করা হবে। রমজান মাস আসার আগেই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।