ধর্ম ডেস্ক:
ইসলামে গায়রে মাহরাম নারী-পুরুষের শারীরিক সম্পর্ক হারাম। আন্তরিক তওবা ছাড়া এ ধরণের গুনাহ মাফ হয় না। তওবার জন্য শর্ত হলো— ১) কৃত গুনাহের জন্য অনুতপ্ত হওয়া ২) গুনাহ সম্পূর্ণ পরিহার করা ৩) ভবিষ্যতে না করার দৃঢ় সংকল্প করা ও ক্ষমা প্রার্থনা করা ৪) বান্দার হক নষ্ট করে থাকলে তা আদায় করা। (তিরমিজি: ৪০২, আল মিনহাজ ফি শরহি মুসলিম: ১৭/৫৭, ফতোয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ২/২৩৯-২৪০)
‘যারা ভুলবশত মন্দ কাজ করে, অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হলো সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাময়। (সুরা নিসা: ১৭)
তবে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া কোনো ব্যক্তির জন্য অন্য কাউকে বিয়ে করা হারাম হয়ে যাবে না। অর্থাৎ চাইলে অন্যত্র বিয়ে করা যাবে। কেননা এতে শরিয়ত কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। বরং সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া নারীর সঙ্গে (নারীর ক্ষেত্রে পুরুষের সঙ্গে) আর কোনোরকম যোগাযোগ ও ক্ষমা চাওয়ার জন্যও কথোপকথন করা জায়েজ হবে না। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা জেনা তথা ব্যভিচারের কাছেও যেও না। নিশ্চয়ই এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল: ৩২)
শারীরিক সম্পর্কে আর না জড়ানোর ইচ্ছা থাকলেও পুনরায় যোগাযোগ কিংবা সম্পর্ক করা জায়েজ হবে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, চোখের ব্যভিচার হলো (বেগানা নারীকে) দেখা, জিহ্বার ব্যভিচার হলো (তার সঙ্গে) কথা বলা (যৌন উদ্দীপ্ত কথা বলা)। (বুখারি: ৬২৪৩)
শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হওয়া ওই মেয়েকে (মেয়ের ক্ষেত্রে ছেলেকে) বিয়ে করতে যদি কোনো সমস্যা না থাকে এবং বিয়ের পর শরয়ী বিধানাবলী পালনে সচেষ্ট থাকার প্রবল সম্ভাবনা থাকে, তাহলে আলেমদের মতে, তাকে বিয়ে করা জায়েজ হবে। অন্যথায় অন্যত্র বিয়ে করতে দোষ নেই।
উল্লেখ্য, বিয়েবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক মারাত্মক গুনাহগুলোর একটি। এমনকি হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, এই গুনাহ করার সময় ঈমান থাকে না। রাসুলুল্লাহ (স.) ইরশাদ করেছেন, ‘জিনাকারী যখন জিনায় লিপ্ত হয়, তখন সে মুমিন থাকে না। যখন কেউ মদপান করে, তখন সে মুমিন থাকে না। কেউ চুরি করার সময় মুমিন থাকে না এবং কোনো ছিনতাইকারী এমনভাবে ছিনতাই করে যে, ভুক্তভোগী তার দিকে অসহায় তাকিয়ে থাকে; তখন সে (ছিনতাইকারী) মুমিন থাকে না। (সহিহ বুখারি: ৬৭৭২)
তাই মুমিন মুসলমানকে এই গুনাহের ধারে-কাছেও যাওয়া অনুচিত। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে এমন ভয়ঙ্কর গুনাহ থেকে মুক্ত থাকার তাওফিক দান করুন। আমিন।