জীবননগর অফিস:
জীবননগরের সীমান্ত ইউনিয়নের হরিহরনগর গ্রামের ১৫ বছর বয়সী সাজিম হোসেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। আয়ের একমাত্র উৎস পাখিভ্যান। কিন্তু ভ্যানটি ভাড়া নেয়ার নামে একটি প্রতারক চক্র চুরি করে নিয়ে গেছে ভ্যান। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র পরিবারটি। এ ঘটনায় জীবননগর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুর রায়পুর ইউনিয়নের বালিহুদা মাঠের মধ্যে থেকে প্রতারক চক্র ভ্যানটি চুরি করে নিয়ে যায়।
হতদরিদ্র শিশু সাজিম হোসেন কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, আমার মা এনজিও থেকে লোন নিয়ে একটি পাখিভ্যান গাড়ী কিনে দেয়। আমি পাখিভ্যানটি চালিয়ে সারাদিনে যা আয় হয়, তা দিয়ে আমাদের সংসার চলে। আমি প্রতিদিনের মত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে ভাড়া মারার জন্য অবস্থান করছিলাম। ওই দু’জন পেয়ারা নেয়ার জন্য আমার পাখিভ্যানটি ভাড়ায় নিয়ে বাঁকা ব্রিকস ফিল্ডের নিকটে যায়। সেখান থেকে তারা আমাকে হাসাদহ বাজারে নিয়ে যায়। সেখানে তারা আমাকে জানায় বালিহুদা গ্রামের বাগান থেকে পেয়ারা আনতে হবে। আমি তাদের বিশ্বাস করে তাদের সাথে বালিহুদা মাদ্রাসা ছাড়িয়ে রাস্তার পাশে পাখিভ্যানটি রেখে তারা আমাকে বাগানের দিকে নিয়ে যায়। কিন্তু মাঝপথে তাদের মধ্যে একজন অন্য বাগানে যাওয়ার কথা বলে চলে যায়। এর কিছুক্ষণ পর আমার সাথে থাকা ব্যক্তিটি আমাকে ভ্যানটি বাগান বরাবর নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। আমি রাস্তায় গিয়ে দেখি ভ্যানটি নেই। আবার পেয়ারা বাগানের ভিতরে প্রবেশ করা লোক দু’টিও নেই।
সাজিমের পিতা দিন মজুর হাফিজুল বলেন, আমার ছেলেকে অজ্ঞাত প্রতারকরা ভাড়ার নামে তাকে বালিহুদা মাদ্রাসার অদুরে নিয়ে কৌশলে ছেলের পাখিভ্যানটি হাতিয়ে পালিয়েছে। পাখিভ্যানটি এনজিও থেকে ঋণ তুলে কিনেছিলাম। এখন কি হবে, কি করে চলব ভেবে পাচ্ছি না।
সীমান্ত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসাবুল ইসলাম মিল্টন মোল্যা বলেন, ঘটনাটি মর্মান্তিক। এলাকার বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে ছেলেটিকে একটি ভ্যান কিনে দেয়া যেতে পারে। দেখা যাক কি করা যায় হতদরিদ্র ছেলেটির পরিবারের জন্য।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল খালেক বলেন, ঘটনার ব্যাপারে একটি লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার ব্যাপারে ইতিমধ্যে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।