নিজস্ব প্রতিবেদক:
১৫ টাকাড চাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দরিদ্র মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যানের কয়েকজন ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ইউনিয়নবাসীকে সর্তক করতে মাইকিং করা হয়েছে। এ ব্যাপারে কয়েকজন ইউপি সদস্য আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, প্রধানমমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচীর আওতায় ১৫ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। একই সাথে খোলাবাজারে (ওএমএস) বিক্রির জন্য চালের বরাদ্দ দ্বিগুণ করা হয়েছে। প্রতি ডিলার প্রতিদিন দুই টন করে চাল বিক্রি করবেন। আগে একজন ডিলার এক টন করে চাল পেতেন। খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় টিসিবির কার্ডধারীরা প্রতিমাসে ২ বার ৫ কেজি করে চাউল নিতে পারবে ৩০ টাকা কেজি দরে আর ওএমএসের আওতায় শুক্র ও শনিবার ব্যতিত সপ্তাহে ৫ দিন ৫ কেজি করে চাউল কিনতে পারবে ৩০ টাকা দরে।
এ কর্মসূচির বাড়তি সুবিধার জন্য দরিদ্র ও স্বল্প আয়ের মানুষ মরিয়া হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বরদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন আলমডাঙ্গা উপজেলার বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চলের ঘনিষ্ঠ কতিপয় ব্যক্তি। তারা ১০ টাকার চালের কার্ড করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে দরিদ্র মানুষের নিকট থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামের সাবেক মেম্বর বিপ্লব, ডামোশ গ্রামের মিনারুল ও বেলগাছি গ্রামের শাহিনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এরা সকলেই সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠজন বলে অভিযোগকারীরা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফরিদপুর ১নং ওয়ার্ডের রাকিবুল ইসলামের নিকট থেকে ১ হাজার, সোনার নিকট থেকে ১১শ, হেলালের নিকট থেকে ১হাজার, মতিয়ারের নিকট থেকে ১ হাজার, মনিরের নিকট থেকে ১ হাজার, ডাবলুর নিকট থেকে ১হাজার, বেলগাছি ৮নং ওয়ার্ডের লিপুর নিকট থেকে ১১শ, রইতনের নিকট থেকে ১১ শ, সোহরাবের নিকট থেকে ৩ হাজার, ৭নং ওয়ার্ডের হাসিনা খাতুনের নিকট থেকে ৫শ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে অনেকের ধারণা পুরো ইউনিয়নজুড়েই এই চক্র চেয়ারম্যানের নাম ভাঙ্গিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।
এদিকে, চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠ এই চক্রের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে বেশ কয়েকজন মেম্বর এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ইউপি মেম্বার বলেছেন, এমন পরিস্থিতি সামলাতে চেয়ারম্যানও ব্যর্থ হন। না পেরে তিনি (চেয়ারম্যান) ইউনিয়নবাসীকে সতর্ক করতে ইউনিয়নে মাইকিং করেছেন।
এ ব্যাপারে বেলগাছি ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল হাসান চঞ্চল বলেন, ঘটনা জানার পরে এ ব্যাপারে ইউনিয়নবাসীকে সতর্ক করতে আমি গত ১ সেপ্টেম্বর মাইকিং করেছি। কেউ যেন প্রতারণার শিকার না হয় সেজন্য ইউনিয়নবাসীকে সতর্ক করা হয়েছে। অর্থ হাতিয়ে নেওয়া চক্রের দুয়েকজন তার দলের লোক বলেও স্বীকার করেন চেয়ারম্যান।