শেখ লিটন:
চুয়াডাঙ্গায় নিত্যপণ্যের দাম এখনো চড়া। গেল কয়েকদিন ধরে বাজারে পণ্যের দাম নিয়ে অস্বস্তিতে পড়েছে সাধারণ ক্রেতারা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে কমবেশি সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়েছে। নিত্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমুখি হলেও কিছুটা স্বস্তির হাওয়া বইছে কাঁচা সবজির বাজারে।
গতাকাল শুক্রবার চুয়াডাঙ্গার নিচের বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে কেজিতে ২০ টাকা, আর রসুনের দাম কমেছে ১০-১৫ টাকা। এদিকে বেগুন, আলু, পটল, মুলা, লাউ, কুমড়া, কলা, লেবুসহ অন্যান্য সবজির দাম কেজিতে ১৫ টাকা করে কমেছে। তবে ডিমের বাজারে স্বস্তি ফিরেছে অনেকটাই। এখন এক খাঁচি ডিমের দাম ২৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৩৪০ টাকা। ডিমের সাথে পাল্লা দিয়ে ঝাঁজ বেড়েছিল কাচা মরিচেও। তখন দাম ছিল ২৬০ টাকা কেজি ।
তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মরিচের দাম এখন ৩০ টাকা কেজি। এতে খুশি ক্রেতা সাধারণ। তবে কিছুদিন আগে এসব পণ্যের অস্বাভাবিক দাম বাড়াতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নিম্ন আয়ের মানুষদের। তবে এ সব পণ্যের দাম কমায় এখন কিছুটা স্বস্তির হাওয়া বইছে।
অপরদিকে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। এখন সয়াবিন তেল লিটারে ৭ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯২ টাকায়। তবে খোলাবাজারে পাম অয়েল তেল ভোক্তা পর্যায়ে সহনীয় অবস্থায় আছে। এখন বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা কেজিতে। তবে সব ধরনের মশলার দাম আগের মতোই আছে। তবে কলাই ডালের দাম কেজিতে এখন ১৫ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য ডালের দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে আছে। আগুন লেগেছে চিনি ও পোলাও চালের দামে। এ দুটি পণ্যের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২০-৩০ টাকা। চালের বাজারেও স্বস্তি ফেরেনি এখনও। এমন অবস্থায় বিপাকে আছে দিন আনা দিন খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষরা। মোটা চালের দাম কমলেও এক লাফে বেড়েছে সরু চালের দাম। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে ৭৫ টাকায় দাঁড়িয়েছে। এতে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে নাভিশ^াস দেখা দিয়েছে ।
নিত্যপণ্যের চড়া দামের ব্যাপারে মুদি দোকানিদের যুক্তি, প্রতিদিনই দাম বাড়ছে পণ্যের। দাম ওঠা নামা করায় প্রভাব পড়ছে ব্যবসায়ী ও ভোক্তাদের ওপর। নিত্যপণ্যের সাথে দাম বাড়ছে হুইল, সাবান, শ্যাম্পু, পেস্ট, লোশন, নারকেল তেল, হ্যান্ড ওয়াসসহ আরো অন্যান্য জিনিসের। প্রতিদিন ৫-৬ টাকা প্রতি পিসে বেড়ছে। পাইকার পর্যায়ে দাম বাড়ার কারণে খুচরা বাজারেও দাম বাড়ছে। তবে বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে না বলে এ রকম নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে পণ্যের দাম।
কথা হয় বাজারে আসা ক্রেতা জালাল উদ্দিনের সাথে। তিনি এ প্রতিবেদককে বলেন, আমার বাজারের ফর্দটা আর আগের মতো নেই। বাজারে যে দাম জিনিসের এখন বাজার করতে আসলে ভয় করে । সব নিত্যপণ্যের দাম চড়া। কোনটা রাখব কোনটা কিনব কিছু বুঝছি না। এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ায় ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে ।
এক মুদি ব্যবসায়ি কামাল হোসেন বলেন, নিত্যপণ্যের দাম একটু বেশি। কিন্তু কোম্পানির কিছু পণ্য দাম দিনে দিনে দাম বাড়ছে। এতে আমরা সাধারণ ক্রেতার কাছে বিক্রি করতে গেলে বিতন্ডা হচ্ছে।
এ বিষয় চুয়াডাঙ্গা জেলা বিপণন কর্মকর্তা সহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমবেশি ওঠানামা করছে। আমাদের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে। আর কোন অসাধু ব্যবসায়ি যদি কৃত্রিম সংকটকে কাজে লাগিয়ে সরকারের নির্ধারিত মুল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে পন্য বিক্রি করে তাহলে তার বিরুদ্ধে আইন-অনুযায়ি ব্যবস্থা নেয়া হবে। বাজারে ব্যবসায়ীদের সচেতন করছি, যেন অধিকমূল্যে পণ্য বিক্রি না করে।