মেহেরপুর অফিস:
মেহেরপুরের মুজিবনগরে প্রকাশ্যে দিবালকে চা দোকানী লিয়াকত হত্যা মমলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলো, মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামের মৃত আলিয়াত খাঁর ছেলে কাবিদুল খাঁ, মৃত আবু লায়েস খাঁর ছেলে জামাত আলী খাঁ ও মৃত আলিয়াত খাঁর ছেলে মফিদুল ইসলাম খাঁ। এ ঘটনায় একই গ্রামের মৃত আবু লায়েস খাঁর ছেলে ছোট খোকন, মৃত আবুল খাঁর ছেলে ভরস খাঁ ও লিয়াকত খাঁকে এক বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেছে আদালত। মামলার অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় অপর তিন আসামী ওবিদ আলী, মশিউর রহমান ও তাছিরকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন বিচারক। গতকাল রবিবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে অতিরিক্তি জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ৮ জানুয়ারী মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান গ্রামে ছিলো হাটের দিন। এ দিন দুপুর সাড়ে ৩ টার দিকে ঐ গ্রামের রিপন হাটের মধ্যে মাত্র ৪শ পাওনা টাকা চাইতে যায় একই গ্রামের জামাত আলী ও খোকার কাছে। এ সময় কথা কাটাকাটির এ পর্যাযের তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। পরে আসামীরা সেখান থেকে চলে যায়। রিপন হাটেই তার বড় ভাই লিয়াকতের চায়ের দোকানের একটি বেঞ্চে বসে ছিলেন। কিছুক্ষন পর আসামীরা ১০/১২ জন অস্ত্র নিয়ে রিপনের উপর হামলা চালায়। এ সময় তার ভাই চা দোকানী রিপনকে বাঁচাতে আসলে ধারালো রামদা দিয়ে তার মাথার উপর কোপ বসিয়ে দেয়। রিপন ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। নিহতের ছেলে ফয়সাল ও ভাই মাবুদ তাকে বাঁচাতে গেলে তাদেরকেও ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করা হয়। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এসে উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেলেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকতকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার পরদিন নিহতের ভাই মোখলেছ বাদি হয়ে মুজিবনগর থানায় ৯ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তভার পড়ে মুজিবনগর থানার এসআই মতিউর রহমানের উপর। এক মাসের মধ্যে ঐ বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারী ৯ জনকে দোষী সাব্যস্থ করে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। ১২ জনের সাক্ষি শেষে বিচারক রবিবার সকালে এ মমলার রায় প্রদান করেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. কাজী শহিদুল হক ও আসামী পক্ষের আইনজীবি ছিলেন অ্যাড. মিয়াজান আলী। আসামীরা উচ্চালতে আপিল করবেন বলে জানান তাদের স্বজনরা।