আজ শনিবার | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ | ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ভাষা পরিবর্তনঃ বাংলা ইংরেজি

ই-পেপার ভার্সন দেখতে ক্লিক করুন  e-paper

চিকিৎসা ব্যয় সাড়ে তিন লাখ জাফরুল্লাহ চৌধুরীর

নিজস্ব প্রতিবেদক:
করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এক মাসে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর চিকিৎসায় ব্যয় হয়েছে সাড়ে তিন লাখ টাকা। এই টাকা ব্যয় হয়েছে তার করোনা, ডায়ালাইসিস ও নিউমোনিয়ার চিকিৎসায়। ১৩ মে তিনি করোনা মুক্ত হন।

শুক্রবার সাংবাদিকদের কাছে এ চিকিৎসা ব্যয়ের কথা জানিয়েছেন গণস্বাস্থের চিকিৎসক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ডা. মামুন মোস্তাফিজুর। জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন।

শুধু করোনা চিকিৎসায় কত টাকা ব্যয় হয়েছে- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওভাবে আলাদা করে কোনো হিসাব করা হয়নি। কারণ একদিন পরপর তার ডায়ালাইসিস ও নিউমোনিয়ার চিকিৎসা করতে হয়েছে।

বর্তমানে জাফরুল্লাহ চৌধুরী কেমন আছে জানতে চাইলে মামুন মোস্তাফিজুর বলেন, নিউমোনিয়ার সমস্যা এখনো পুুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি। তাই তাকে হাসপাতালে রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে আয়োজিত এক আলোচনাসভায় নভেল করোনা (কোভিড-১৯) সংক্রমণ থেকে মুক্ত হয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল সাজ্জাদ, তারিক সুজাত, সাবের চৌধুরী এমপি ও আসাদুজ্জামান নূর এমপি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সুপারিনটেনডেন্ট বিগ্রেডিয়ার নাসির উদ্দিন ও অধ্যাপকরা আমার চিকিৎসার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। বন্ধুবর ও শুভানুধায়ী ডা. কাজী কামরুজ্জামান, রফিকুল ইসলাম বাবলু, নঈম জাহাঙ্গীর, ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, তৌফিক এলাহী চৌধুরী ও সৈয়দ আবুল মাকসুদ সার্বক্ষণিক নজরদারি করেছেন।

তিনি বলেন, গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বিগ্রেডিয়ার মামুন মুস্তাফিজুর ও আইসিইউ প্রধান অধ্যাপক নজীব মোহাম্মদের সকাল থেকে রাত অবধি হাসপাতালে আমার শয্যা পাশে উপস্থিত ছিলেন। সেবিকা ও ফিজিওথেরাপিস্টরা হাসিমুখে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমোটলজির অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমদ খানের পরামর্শে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন ছাত্র ডা. সাইমুম আরাফাত পান্থর চেষ্টায় কয়েকবার প্লাজমা দানে আমার শক্তি বৃদ্ধি হয়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যাপক তারিক আলম, মাগুরার ডিপ্লোমা চিকিৎসক ডা. খলিলুর রহমান এবং বিদেশস্থ বন্ধুস্থানীয় বহু চিকিৎসকদের নিয়মিত পরামর্শ ও পরিবীক্ষণ আমার রোগমুক্তিতে সহায়ক হয়েছে।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী আরো বলেন, বোন ঝিনু, ভ্রাতৃবধূ বেলু ও পারিবারিক বন্ধু সাফিয়া আজিমের আকর্ষর্ণীয়, পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ এবং শিরীন হক ও বারীশ হাসান চৌধুরীর জাপানী সুশি সরবরাহ বৈচিত্র্য দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা আমার দ্রুত রোগ মুক্তিতে সহায়ক হয়েছে।

তিনি বলেন, সম্ভবত আমি বাংলাদেশের সবচেয়ে ভাগ্যবান করোনা রোগী। সবাইকে জানাই আমার এবং গণস্বাস্থ্য পরিবারের অফুরন্ত কৃতজ্ঞতা।

বিদেশ নয়, বাংলাদেশে চিকিৎসা নিন- এমন মন্তব্য করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, আমি বাংলাদেশে যেমন স্বাস্থ্য সুবিধা পেয়েছি বাংলাদেশের সব করোনা রোগী যেন

সমমানের চিকিৎসা সুবিধা পায়, এটাই গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সাধনা ও লক্ষ্য।

২৪ মে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর ১৩ জুন জাফরুল্লাহ চৌধুরী করোনা মুক্ত হন। তার করোনা মুক্ত হতে লাগে ২০ দিন। এর মধ্যে তাকে তিনবার প্লাজমা থেরাপি দেওয়া হয়।

১৪ জুন রবিবার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিজ্ঞানী ড. বিজন কুমার শীল সাংবাদিকদের জানান, ১৩ জুন শনিবার রাতে গণস্বাস্থের অ্যান্টিজেন ও অ্যান্টিবডি কিট দিয়ে ডা. জাফরুল্লাহ’র করোনা টেস্ট করা হয়। পরীক্ষায় যে ফলাফল পাওয়া গেছে তাতে নিশ্চিতভাবেই বলা যায় তিনি করোনামুক্ত হয়েছেন। তিনি সুস্থ হয়ে উঠছেন। তার শরীরে যথেষ্ট অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে।

এর আগে ২৪ মে গণস্বাস্থ নগর হাসপাতালে তাদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস শনাক্তের কিট দিয়ে জাফরুল্লাহ চৌধুরীর টেস্ট করা হলে ফলাফল পজেটিভ আসে। পরদিন জাফরুল্লাহ চৌধুরী জানান, তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। ধানমন্ডির বাসায় আইসোলেশনে আছেন। পরে তার স্বাস্থ্যের অবনতি হলে চিকিৎসকদের পরামর্শে গত ২৬ মে থেকে তাকে ধানমন্ডির গনস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের কেবিনে রাখা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অনুবাদ »