আলমডাঙ্গা অফিস:
আলমডাঙ্গা সরকারী পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূরের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসে ছাত্ররা তাদের আন্দোলন স্থগিত করেছে। বিদ্যালয়ের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার জন্য প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানকে দায়ী করে তার অপসারণের দাবীতে ছাত্ররা বিক্ষোভ করে আসছিল। এরই এক পর্যায়ে গতকাল রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দিয়ে এ আশ্বাস প্রদান করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
আলমডাঙ্গা সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্ররা গত শনিবার বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। তারা বিদ্যালয়ে নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কথা তুলে ধরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানের অপসারণের দাবী করে। বিষয়টি জানার পর সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাত্রদের সাথে বসে বিষয়টি শুনবেন বলে জানালে ছাত্ররা আন্দোলন আপাতত স্থগিত ঘোষনা করে।
গতকাল রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল বারি, থানার ওসি তদন্ত আব্দুল আলিম। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ছাত্রদের উদ্দেশ্য বলেন, তাদের উত্থাপিত অভিযোগগুলো তিনি তদন্ত করে দেখবেন। যদি কোন অনিয়ম অব্যবস্থাপনা থাকে আগামী ১০ তারিখে সেগুলোর বিষয়ে শিক্ষকদের সাথে বসে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। পাশাপাশি ছাত্রদেরকে ভবিষ্যতে স্কুল প্রাঙ্গণে এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। পরে ছাত্ররা আন্দোলন স্থগিত করে।
উল্লেখ্য, আলমডাঙ্গার সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় শিক্ষকদের সাথে মতভেদের এক পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তরে টাকা দেওয়ার নাম করে সহকারী শিক্ষকদের কাছ থেকে রবিউল ইসলাম খান ৯ লক্ষ টাকা সংগ্রহ করে। ওই টাকা কোন দপ্তরে লাগেনি জানার পর স্কুলের সহকারী শিক্ষকরা গত ৩০ জুলাই শনিবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলামের নিকট টাকা থেকে ৩ লক্ষ টাকা ফেরৎ নেন। এ টাকা ছাড়াও শিক্ষকরা অভিযোগ করেন করোনাকালীন দুই বছর স্কুল বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ভর্তি ও পরীক্ষা বাবদ প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা কালেকশন করেন প্রধান শিক্ষক। এসব টাকা তিনি তসরুপ করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়। একই সাথে প্রতি মাসে স্কুলের দোকান ভাড়া ৩৭ হাজার টাকারও কোন হদিস নেই বলে জানান শিক্ষকরা। তবে প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম খান এসব অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবী করে আসছেন।
এ ঘটনার কয়েকদিন পর গত শনিবার বিদ্যালয়ের ছাত্ররা স্কুলের কম্পিউটার ল্যাবে টাকা নিলেও ক্লাস না নেওয়া, টয়লেট অপরিস্কার অপরিচ্ছন্ন ও নিম্নমানের সিট বেঞ্চসহ নানা অভিযোগ তুলে শনিবার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে। সংবাদ পেয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু মুসা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন। তিনি জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার তোমাদের সাথে বসে বিষয়টি সুরাহা করবেন। সেই ঘোষনা অনুযায়ী গতকাল রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসার রনি আলম নূর ছাত্রদের সাথে সাক্ষাত করে এসব কথা জানালে পরিস্থিতি শান্ত হয়।