নিজস্ব প্রতিবেদক:
৭৫ কোটি টাকার ব্যয় ধরে চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলবাজারে নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন রেলওয়ে ওভারপাস। শহরের রেলবাজারের রেলক্রসিংয়ের কারণে যানজট ও ভোগান্তি এড়াতে এ ওভারপাস নির্মানের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চুয়াডাঙ্গার রেলওয়ে ওভার পাস নির্মানের জন্য ৭৫ কোটি ১১ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যয় ধরে বরাদ্দের অনুমোদন দেয়া হয়। এদিন আরও ৯টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রায় ২ হাজার ১১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ১০টি প্রকল্প অনুমোদনের এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনা। গণভবন প্রান্ত থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী।
চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ সড়কের রেলবাজার এলাকায় একটি রেলওয়ে ওভারপাসের দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী ছিল চুয়াডাঙ্গাবাসীর। একনেক সভায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণের অনুমোদনের পর দাবী পূরণ হওয়ায় সকলেই স্বস্তি প্রকাশ করেছে। দ্রুতই কাজ শুরু করার দাবী জানিয়েছে অনেকে। এই গুরুত্বপূর্ণ সড়কে ওভারপাস নির্মাণ কাজ শেষ হলে নিরসন হবে যানজট সমস্যার, নিরবচ্ছিন্ন হবে যাতায়ত ব্যবস্থা।
গতকালের একনেক সভায় চুয়াডাঙ্গার রেলওয়ে ওভারপাসের বিষয়টি আলোচ্য-৩ নং এজেন্ডায় অন্তর্ভুক্ত ছিল। আলোচনায় বলা হয় কুষ্টিয়া (ত্রিমোহনী)-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ (আর-৭৪৫) আঞ্চলিক মহাসড়কের ৮১তম কিঃমিঃ-এ রেলবাজার রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে চুয়াডাঙ্গা শহরের যানজট নিরসনসহ মেহেরপুর জেলার ঐতিহাসিক মুজিবনগরের সাথে চুয়াডাঙ্গা, ঝিনাইদহ, খুলনা অঞ্চলের যানজটমুক্ত ও নিরাপদ যোগাযোগ স্থাপন এবং প্রকল্প এলাকার আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নয়ন হবে। এ প্রকল্পের মধ্যে থাকছে- ১টি রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ (দৈর্ঘ্য ৪১৯ মিটার) (খ) ৩৩০ মিটার এপ্রোচ সড়কসহ এ.ই. ওয়াল নির্মাণ (গ) ০.০৮২ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ (ঘ) ৩২০ মিটার সসার ড্রেন নির্মাণ (ঙ) ২০০০ মিটার সৌন্দর্যবর্ধন কাজ (রিফ্লেক্টিং রোড স্টাডস, রোড মার্কিং, লাইটিং) এবং (চ) ইউটিলিটি স্থানান্তর। প্রকল্পটি ২০২১-২২ অর্থবছরের এডিপিতে বরাদ্দবিহীন অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে (এডিপি পৃষ্ঠা নং-৫২৩, ক্রমিক নং-২৪৯)। প্রকল্পের বিস্তারিত তথ্যে আরও উল্লেখ করা হয়- উদ্যোগী মন্ত্রণালয়/বিভাগ: সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ/সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়। বাস্তবায়নকারী সংস্থা: সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর। প্রাক্কলিত ব্যয়: ৭৫কোটি ১১লাখ ০৭ হাজার টাকা। অর্থায়ন: সম্পূর্ণ জিওবি। বাস্তবায়নকাল: জানুয়ারি ২০২২ হতে ডিসেম্বর ২০২৩।
গতকালের অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো- কৃষি মন্ত্রণালয়ের দুটি প্রকল্প যথাক্রমে যশোর অঞ্চলে টেকসই কৃষি সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং মসলার উন্নত জাত ও প্রযুক্তি সম্প্রসারণ প্রকল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের ৫টি প্রকল্প। কুষ্টিয়া (ত্রিমোহনী-মেহেরপুর-চুয়াডাঙ্গা-ঝিনাইদহ আঞ্চলিক মহাসড়কের ৮১তম কিলোমিটার) রেলবাজার রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ; চরখালী, তুষখালী-মঠবাড়ীয়া-পাথরঘাটা মহাসড়কের পিরোজপুর অংশের জরাজীর্ণ, অপ্রশস্ত বেইলি ব্রিজের স্থলে পিসি গার্ডার সেতু ও আরসিসি বক্স কালভার্ট নির্মাণ প্রকল্প। কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ (১.৬০ কি.মি. পর্যন্ত) সড়ক প্রশস্তকরণ; জামালপুর শহরের গেইটপাড় এলাকায় রেলওয়ে ওভারপাস নির্মাণ (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প এবং কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক (এন-১) উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়। বাংলাদেশের ৬৪টি জেলা সদরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত ভবন নির্মাণ, ঢাকা সেনানিবাসে এমইএস (মিলিটারি ইঞ্জিনিয়ার সার্ভিসেস) এর ভৌত অবকাঠামো সুবিধাদি সম্প্রসারণ প্রকল্প এবং ‘কক্সবাজার জেলার উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন কার্যক্রমে জরুরি সহায়তা (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প’ অনুমোদন দেওয়া হয়।