নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘এসো মিলি সবে নবান্নের উৎসবে’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় নবান্ন উৎসব ও মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা চন্ডিপুর গ্রামে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়।
নবান্ন উৎসবে সকাল থেকে গ্রামের কৃষকদের বাড়িতে বাড়িতে এক আনন্দ বিরাজ করছিল। যেখানে ছোট থেকে বড়, সব বয়সীরা এই নবান্ন উৎসব উপভোগ করে। এই উৎসবটির আয়োজনে ছিল চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
উৎসবে গিয়ে দেখা যায়, চন্ডিপুর গ্রামের কৃষক তারিকুল ইসলামের বাড়ির চারপাশে আগুনের চুলাই গ্রামীণ বধুদের নিখুঁত হাতের ছোঁয়ায় তৈরি হচ্ছে নবান্ন উৎসবের হরেক রকমের পিঠা। যার মধ্যে আছে, পিঠাপুলি, পাকান পিঠা, চিতই পিঠা, পাটিসাপটা, নারকেল পিঠা, ফুল পিঠা, ছিটা পিঠা, পাতা পিঠা, বিস্কুট পিঠা, রুটি পিঠা, জামায় ভাজা পিঠা, বউ ভুলানো পিঠা সহ প্রায় অর্ধশতাধিক পিঠার আয়োজনে এই এক নবান্ন উৎসব। আর এই নবান্ন উৎসবের পিঠার স্বাদ নিয়েছেন উৎসবের প্রধান অতিথি চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড.কিসিঞ্জার চাকমা।
নবান্ন উৎসবের এই হরেক রকমের পিঠার স্বাদগ্রহন শেষে প্রধান অতিথি জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, বাংলাদেশ আজ কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ। কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছে। প্রতিবার যদি এই নবান্ন উৎসব পালন করা হয় তাহলে বাঙালি যে একটা ঐতিহ্য অব্যাহত থাকবে। এই ভাবে গ্রাম বাংলার কৃষকের আনন্দ সারাজীবন অটুট থাকুক। মূলত গ্রামবাংলার চিরায়ত সংস্কৃতি লালন এবং তা ধরে রাখতেই এই উৎসব। নবান্ন বাঙালির ঐতিহ্য। নবান্নের সঙ্গের কৃষির একটি সম্পর্ক রয়েছে। কৃষি প্রধান এ দেশের কৃষকরা তাদের প্রচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে জানবে এবং কৃষির আধুনিকায়নে উৎসাহী হবে সেটাই প্রত্যাশা। নবান্ন উৎসব হল নতুন আমন ধান কাটার পর সেই ধান থেকে প্রস্তুত চালের প্রথম রান্না উপলক্ষে আয়োজিত উৎসব। সাধারণত বাংলা অগ্রহায়ণ মাসে অর্থাৎ হেমন্তকালে আমন ধান পাকার পর এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। কোথাও কোথাও মাঘ মাসেও নবান্ন উদ্যাপনের প্রথা রয়েছে। এই নবান্ন উৎসবের মধ্য দিয়ে কৃষকরা নতুন উদ্দ্যোমে জেগে উঠবে।
উৎসবের শেষ পর্বে কৃষকদের কৃষি কাজে আরও উৎসাহিত করার জন্য এবং কৃষিতে অগ্রগতি বাড়াতে সেখানে মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপত্বিত করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার শামিম ভূইয়া, সদর উপজেলার কৃষি অফিসার আফরিন বিনতে আজিজ, সহকারি কৃষি অফিসার আসিফ ইকবাল, পরিসংখ্যান অফিসার বিলাল হোসেন, উপ-সহকারি কৃষি অফিসার আব্দুল করিম, শেফালি খাতুন, প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটির সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন উপ-সহকারি সহকারি কৃষি অফিসার আমিরুল ইসলাম রাসেল।