জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী বাজারে গত মঙ্গলবার রাতে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলার অভিযোগ উঠেছে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ-কমিটির সদস্য ও চুয়াডাঙ্গা-২ আসনে নৌকার মনোনয়ন প্রতাশী সাদিকুর রহমান বকুলের সমর্থকদের বিরুদ্ধে। এই হামলার প্রতিবাদে গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় উথলী বাজারে মানববন্ধন করেছেন ব্যবসায়ীরা। আর হামলায় সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন উথলী বাসস্ট্যান্ড বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আসাদুর রহমান বিশ্বাস, সাধারণ সম্পাদক মোবারক সোহেল আহমেদ প্রদীপ। এ সময় তারা বলেন, ‘নৌকার মনোনয়ন প্রত্যাশী সাদিকুর রহমান বকুলের কর্মীরা উথলী বাসস্ট্যান্ডে ব্যবসায়ীদের উপরে হামলা দোকান ভাঙচুর ও সাধারণ মানুষকে পিটিয়ে আহত করেছে। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে বকুলকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবী জানাচ্ছি। আগামী ৭ দিনের মধ্যে বকুলকে গ্রেফতার করা না হলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন উথলী বাসস্ট্যান্ড বাজারের ব্যবসায়ীরা।’
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকালে জীবননগর শহরে সাদিকুর রহমান বকুলের নেতৃত্বে তার কর্মী সমর্থক বাহিনী দেশীয় অস্ত্রসহ লাঠি নিয়ে জীবননগর শহরে ব্যাপক তান্ডব চালায়। পরে জীবননগর থেকে ফেরার পথে সন্ধ্যায় উথলী ডিগ্রি কলেজের সামনে ট্রাক সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে গাড়ী ভাংচুর শুরু করে। ব্যবসায়ীরা তা বাধা দিলে তাদেরকে পিটিয়ে আহত করে দোকান ভাংচুর ও লুটপাট করে। পরে খবর পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে ঘটনাটি শান্ত হয়। পরবর্তীতে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দামুড়হুদা সার্কেল) জাকিয়া সুলতানা।
এই ঘটনায় ৬জন ব্যবসায়ী গুরুতর আহত হয়।আহতদের জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। ওইদিন রাতে জীবননগর থানায় ২টি মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ সহ ৪০-৫০ জন অজ্ঞাতনামা আসামী করে উথলী বাসস্ট্যান্ড বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি আসাদুর রহমান বিশ্বাস বাদী হয়ে জীবননগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাদিকুর রহমান বকুল বলছেন, ‘আমি ৫০০ মোটরসাইকেল নিয়ে একটি অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরছিলাম। এ সময় পেছন থেকে বর্তমান এমপি আলী আজগার টগরের সমর্থক উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের নেতৃত্বে ৩০-৪০ জন মোটরসাইকেল বহরে হামলা করে তাদের ধরে নিয়ে যান। পরে আবার আমরা ফেরত গিয়ে আমার লোকজনের ছাড়িয়ে নিয়ে আসি। পরে আব্দুল হান্নানের লোকজন দোকান ভাঙচুর করে আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।’
এ বিষয়ে উথলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান বলেন, তিনি (সাদিকুর রহমান বকুল) নৌকার মনোনয়ন প্রতাশী। তিনি লাঠি হাতে করে মিছিল করবেন কেন? আপনি ঘটনাস্থলে আসলে দেখতে পাবেন, তার লোকজন ভ্যাননচালক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করেছে। যদি আমরা হামলা করতাম তার লোকজন টিকতে পারতো না। আমি তো ঘটনাস্থলে ছিলাম না। তিনি মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। হামলার ঘটনায় তো তার লোকই গ্রেপ্তার হয়েছে।
জীবননগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম জাবীদ হাসান বলেন, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা ও ট্রাক ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। অন্য আসামীদের ধরতে অভিযান চলছে।