দর্শনা অফিস:
চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় বড় দুধপাতিলা গ্রামে নিষেধাজ্ঞার পরেও সরকারি জায়গা অবৈধ ভাবে দখল করে হোটেল নির্মাণ কাজ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে একই গ্রামের বাবলু ও আজাদের বিরুদ্ধে। গত ৪-৫ দিন আগে থেকে নিচ থেকে কলাম ঢালাই দিয়ে পিলার তুলে এই নির্মাণ কাজ শুরু করে তারা। তবে ঘটনাস্থলে দামুড়হুদা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসার পরিদর্শন করে নির্মান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ প্রদান করে বলেও জানান স্থানীয়রা।
জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হাউলী ইউনিয়নের বড় দুধপাতিলা গ্রামের পূর্ব পাড়া ওয়াক্তিয়া মসজিদের পাশে দর্শনা-হিজলগাড়ি সড়কের সাথেই জেলা প্রশাসনের আওতাধীন সরকারি ১নং খতিয়ানের জমি কোন প্রকার লিজ বন্দবস্ত ছাড়াই সেখানে কলাম ঢালাই দিয়ে নির্মান কাজ চলছে। আর এই নির্মাণ কাজ করছে বড় দুধপাতিলা গ্রামের মৃত হাসেম আলীর ছেলে বাবলু মিয়া (২৭) ও একই গ্রামের মৃত রহিম মন্ডলের ছেলে আজাদ মিয়া (৪৮)। এ ঘটনায় দামুড়হুদা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস ও ইউনিয়ন ভূমি অফিসার রকিবুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নির্মান কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। কিন্তু নিষেধাজ্ঞার পরেও কোন খুঁটির জোরে তারা অবৈধ ভাবে এই কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এটা নিয়ে গ্রামে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে। তবে কি সরকারি নিষেধাজ্ঞার থেকেও তাদের জোর বেশি? এমনটাই প্রশ্ন স্থানীদের মাঝে। সরকারি এই জায়গাটি দীর্ঘদিন খালি থাকার পর বাবলু ও আজাদ বাঁশের খুটির উপরে টিন দিয়ে দখলে রাখে এরপর গ্রামে প্রচার করে এটা আমাদেরই নিজেদের জমি। পরে গ্রামের লোকজন কোন ভাবে জানতে পারে এটা আসলে সরকারি ১নং খতিয়ান ভুক্ত জেলা প্রশাসকের আওতাধীন জমি। এরপর বিষয়টি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দামুড়হুদা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কাজটি না করার জন্য জানান। তারপরেও কাজ করছে এমন খবর পেয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে একাধিকবার যেয়ে নির্মাণ কাজ করতে নিষেধ করেন। কিন্তু তিনি চলে গেলে আবারও কৌশলে কাজ শুরু করেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সরকারী জায়গায় টিনের চালের পাশে রড, খোয়া, সিমেন্ট বালু দিয়ে নির্মাণ কাজের জন্য নিচ থেকে ঢালাই পিলার এর কাজ চলছে। সেখানে নির্মাণ কাজের ছবি ও ভিডিও ধারণ করার সময় সেখানে উপস্থিত থাকা তাদেরই নিজস্ব লোকজন একটু বিব্রত হয় এবং তাদের সাথে কথা বলতে গেলে কথার মিল পাওয়া যায় না। কেউ কৌশলে নির্মাণ কাজ করা মিস্ত্রিদের সরিয়ে দেন, কেউ আবার সেখান থেকে চলে যায়। আবার এই নির্মাণ কাজ করছেন কে? তার নাম জানতে চাইলে বাবলুর নামটি শোনা যায়। তবে তার কথা জিজ্ঞাসা করতেই শুরু হয় তালবাহানা। একজন বলেন, বাবলু তো এখানেই ছিলো। আরেকজন বলেন, সে তো নাই কাজে গেছে, কখন আসবে কোন ঠিক নাই। অন্য আরেকজনের কাছে বাবলুর মোবাইল নম্বর চাইলে তিনি বলেন, আমার কাছে তার মোবাইল নম্বর নেই। আরেকজন বলেন, বাবলুর নাকি মোবাইল ফোনই নাই। এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাবলু মিয়ার সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন। আজাদ মিয়া বলেন, আমি এই কাজের সাথে যুক্ত না। ওটা বাবলু কাজ করছে আমার কোন কিছুই না।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি শুনে আমাদের অ্যাসিল্যান্ড স্যার এবং আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করার জন্য বলেছি। এরপরও আবারো কাজ করার খবর পেয়ে সেখানে পুনরায় কাজ করতে নিষেধ করেছি।
দামুড়হুদা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাসের কাছে এ বিষয়ে জানার জন্য একাধিকবার তার মুঠোফোনে কল দিলে তিনি ফোনটি রিসিভ করেননি।