আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের জলবায়ু পর্যবেক্ষণ বিষয়ক সংস্থা কোপার্নিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস (থ্রিসিএস) জানিয়েছে, এক লাখ ২৫ হাজার বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উষ্ণতম মাসটি পার করে ফেলেছে পৃথিবীবাসী। এটি ছিল ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস৷ এর মধ্যদিয়ে উষ্ণতার রেকর্ড গড়েছে ২০২৩ সাল। তবে এখানেই শেষ হয়, নতুন আরো আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির চরম আশঙ্কা করছেন তারা।
ভারতের জলবায়ু বিজ্ঞানীদের বরাত দিয়ে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, দুঃসময় আসছে। এবার একপ্রকার গরমে ফুটবে গোটা বিশ্ব। জলবায়ু পরিবর্তনে বাড়ছে বৈশ্বিক উষ্ণতা। গ্রিনহাউস গ্যাসগুলোর (কার্বন ডাই-অক্সাইড, মিথেন, জলীয় বাষ্প, ওজোন, ক্লোরো-ফ্লুরো কার্বন) অতিরিক্ত প্রভাবে ভয়ঙ্কর হচ্ছে পরিস্থিতি।
আবহাওয়ার ক্রমবর্ধমান তাপ বৃদ্ধির কারণে বনাঞ্চলে আগুন লাগছে। এছাড়া বিশ্বের কাছে সবচেয়ে বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে রয়েছে গ্লোবাল ওয়ার্মিং। প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে পৃথিবীর তাপমাত্রা। বিগত কয়েক বছরে জলবায়ুতে ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
অসময়ে বৃষ্টি, বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, ভূমিধসের মতো ভয়াবহ ঘটনা ঘটছে একের পর এক। এবার জারি চূড়ান্ত সতর্কতা। ২১০০ সালের মধ্যে ৫.১ ডিগ্রি পর্যন্ত তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমনই সতর্কতার কথা শুনিয়েছেন দেশটির আইআইটি খড়গপুরের বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি ‘ক্লাইমেট রিসার্চ’ নামে একটি অলাভজনক বৈজ্ঞানিক গবেষণা সংস্থা পরিচালিত এক গবেষণায় বলা হয়, গত ১২ মাস পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণতম বছর।
সংস্থাটি বলছে, ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সময়কাল ছিল পৃথিবীতে রেকর্ড করা সবচেয়ে উষ্ণ তাপমাত্রা। কয়লা পোড়ানোর ফলে প্রাকৃতিক গ্যাস, অন্যান্য জ্বালানি, কার্বন ডাই অক্সাইডের মতো গ্যাস নির্গত হচ্ছে যা পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়িয়ে তুলেছে। এ কারণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করেছে। ক্লাইমেট সেন্ট্রালের এক বিজ্ঞানী অ্যান্ড্রু পার্শিং বলেন, আমি মনে করি এই বছরের পরিসংখ্যান থেকে একটি বিষয় আমাদের সামনে পরিষ্কার। আমরা কেউ আর নিরাপদ নই। বছরের কোনো না কোনো সময়ে অস্বাভাবিক তাপমাত্রার সাক্ষী থেকেছে পৃথিবী।
তাপমাত্রা বৃদ্ধির যেসব লক্ষণ সামনে
এক.
বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বিঘ্ন হয়েছে। কারণ উষ্ণ তাপমাত্রায় বাতাসে বেশি জলীয় বাষ্প আটকে থাকে। তাই বৃষ্টি হলে প্রায়ই ঝড়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়।
দুই.
খরা নদীগুলো শুষ্ক হয়ে যাচ্ছে। এতে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে মানুষ।
তিন.
মারাত্মক জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দাবানলের সৃষ্টি হচ্ছে।