নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিকট দুর্গন্ধযুক্ত মুরগির বিষ্ঠা নিয়ে খুলনায় যাওয়ার পথে চুয়াডাঙ্গা শহরের রেলগেট এলাকায় চালকসহ দুটি ট্রাক আটক করেছে স্থানীয় জনতা। গতকাল বুধবার রাত পৌঁনে ১১টার দিকে আলমডাঙ্গা-চুয়াডাঙ্গা সড়কের একাডেমি মোড় হয়ে ট্রাক দুটি বিকট দুর্গন্ধযুক্ত দ্রব্য নিয়ে রেলগেট অভিমুখে যাওয়ার পথে জনতার হাতে আটক হয়। দুটি ট্রাকযোগে (ঢাকা মেট্রো ন-১৯-৭২৫৫ ও ঢাকা মেট্রো ড-১৪-৮৫৬০) বিকট দুর্গন্ধযুক্ত বিষ্ঠা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।
খুলনা সদরের হারুন শেখের ছেলে ট্রাক চালক আব্দুর রহমান বলেন, ইউনুস নামের একজন দালালের কথায় আমরা এগুলো বহন করতে এসেছি। অপর ট্রাকের চালক বলেন, কুষ্টিয়ার পাটিকাবাড়ি এলাকা থেকে মুরগির বিষ্ঠা লোড করা হয়। তারা বলেন আমাদেরকে দালাল ভুল বুঝিয়ে এই দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস আমাদের ট্রাকে উঠিয়ে দিয়েছে।
এদিকে, চুয়াডাঙ্গার স্থানীয় উৎসুক জনতা বলেন, বেশ কয়েক মাস থেকে প্রতিদিন গভীর রাতে এভাবে ট্রাকযোগে এই পচা দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস নিয়ে যাওয়া হয় খুলনার উদ্দেশ্যে। আমরা প্রথম প্রথম বুঝতে না পারলেও গত এক সপ্তাহ আগে ট্রাকযোগে এ বিকট দুর্গন্ধযুক্ত বিষ্ঠা নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এটি নিশ্চিত হই। সে সময় স্থানীয় কিছু যুবক ছেলেরা ট্রাক ধাওয়া করতে গেলে একটি ভ্যান ও গতিরোধক উপেক্ষা করে দ্রুতগতিতে সেই ট্রাক নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। কিন্তু গতকাল বুধবার রাতে স্থানীয় জনতা এ বিষয়টি জানার সাথে সাথে দ্রুত রেলগেটে এসে তাদেরকে আটক করে।
উৎসুক জনতার মধ্যে শেখ রাসেল নামে একজন বলেন, গত রোজার মাস থেকে এই দুর্গন্ধযুক্ত মুরগির বিষ্ঠা বা বিষাক্ত দুর্গন্ধযুক্ত কিছু ট্রাকযোগে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে বলে নিশ্চিত হই। এই ট্রাক যখন চুয়াডাঙ্গা শহরের ভেতর দিয়ে যায়, তখন প্রচন্ড দুর্গন্ধে বাসা বাড়িসহ এলাকার মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে আমরা বেশ কিছুদিন থেকে এই পচা দুর্গন্ধ জিনিস বহনকারী ট্রাক ধরার চেষ্টা করেছিলাম। আজকের সফল হয়েছি। তবে এ বিষয়ে জেলা পরিবেশ সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। এটি রোধ করা না গেলে ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয় বা স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। আমরা বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পরে বেশ কয়েকদিন এই দুর্গন্ধযুক্ত পঁচা উৎসৃষ্টাংশ বহনকারী ড্রাইভারদের বহন না করতে অনুরোধ জানাই। কিন্তু সেটা বন্ধ হয়নি।
চালকদের কাছ থেকে জানা গেছে, আলমডাঙ্গার ইউনুস দালাল প্রতিদিন ভিন্ন ভিন্ন চালক পাঠিয়ে এই পচা দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস বহন করে খুলনায় নিয়ে যেত। ফলে চালকরা বুঝে ওঠার আগেই দালাল ইউনূসের স্বার্থসিদ্ধি হয়ে যেত। ড্রাইভারদের সূত্রে আরও জানা গেছে, এই বিকট পচা দুর্গন্ধযুক্ত মুরগির বিষ্ঠা উচ্ছিষ্ট মুরগির পচা নাড়ি ভুঁড়ি মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
স্থানীয় জনতা এই কথা জানার পর তারা মন্তব্য করে বলেন, এই বিষাক্ত বিকট পচা দুর্গন্ধযুক্ত জিনিস যে মাছকে খাওয়ানো হয় সেই মাছি আমরা কিনে খাচ্ছি। তাহলে আমরা কতটা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর থানা পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। এ খবর লেখা পর্যন্ত পরবর্তীতে কি হয়েছে সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।