নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘আইন মেনে সড়কে চলি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গায় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়। র্যালিটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একইস্থানে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা। এসময় তিনি বলেন, ‘আমাদের সবাইকে নিজ দায়িত্বে সড়ক নিরাপদ রাখতে হবে। সবাইকে সড়কের আইন মানতে হবে। শুধু নিজে নিরাপদ হলে হবে না, নিরাপদ সড়কের ব্যবহার জানতে হবে। তাই সকলে নিরাপদ সড়ক মেনে সবাই সড়কে চলবো। নিরাপদ সড়ক গড়বো। আর যেন সড়কে প্রাণ না ঝরে। সেজন্য সবাই নিরাপদ গড়ার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে।’
চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আরাফাত রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) সহকারি পরিচালক সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) রিয়াজুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান ও এস.এম. ইস্রাফিল, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকন, চুয়াডাঙ্গার ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. আওলিয়া রহমান, জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনজুরুল করিম, চুয়াডাঙ্গা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর রহমান, চুয়াডাঙ্গা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন মুক্তা, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত ভাইস চেয়ারম্যান শাহাজাদী মিলি, মাথাভাঙ্গা নদী বাঁচাও আন্দোলন কমিটির সভাপতি ও সাবেক অধ্যক্ষ হামিদুল হক মুন্সি, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী মহিলা লীগের আহ্বায়ক নুরুনাহার কাকুলি, চুয়াডাঙ্গা জেলা নিরাপদ সড়ক চাই এর সভাপতি অ্যাড. মানিক আকবর, সাধারণ সম্পাদক হোসেন জাকির ও সদস্য শেখ লিটন প্রমুখ।
দামুড়হুদা অফিস জানিয়েছে:
দামুড়হুদায় জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস পালন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল রবিবার দুপুর ২টার দিকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। পরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা পরিষদ সভা কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনায় আমি আমার ১৯ বছরের ভাইকে হারিয়েছি ৩ বছর আগে। এই শোক এখনো আমার পরিবার কাটিয়ে উঠতে পারিনি। কোন না কোন পরিবারের ভাই বোন মা আত্মীয়-স্বজন হারাচ্ছে সড়ক দুর্ঘটনায়। প্রতিদিনই দেশের সার্বিক সড়ক দুর্ঘটনার বিষয়গুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, চালকদের অদক্ষতা, বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো, ওভারটেকিং করার প্রবল মানসিকতা, ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রাপ্তিতে স্বচ্ছতা ও জনসচেতনতার অভাব, ট্রাফিক আইন কিংবা রাস্তায় চলাচলের নিয়ম না মানায় দুর্ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। সড়ক দুর্ঘটনার অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে, পরিকল্পনাহীনভাবে সড়ক-মহাসড়ক নির্মাণ, নির্দিষ্ট লেন ধরে গাড়ি না চালিয়ে সড়কের মাঝখান দিয়ে চালকদের গাড়ি চালানোর প্রবণতা, রাস্তায় বিপজ্জনক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি চালানো, মাদক সেবন করে গাড়ি চালানো, চালকদের বেপরোয়া গতিসহ ভুলপথে গাড়ি চালানো, রাস্তা দিয়ে চলাচলকারীদের রাস্তার মাঝখান দিয়ে চলাচল, রাস্তা পারাপারের নিজ নিজ অবস্থান থেকে সবাইকে সচেতন হতে হবে, নিয়ম মেনে চলতে হবে তাহলেই সড়ক দুর্ঘটনা থেকে মানুষ রক্ষা পাবে।’
দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতার সভাপতিত্বে এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার তোফাজ্জল হক, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের কর্মকর্তা রুবেল হোসেন, উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী আহসান হাবীব, দামুড়হুদা মডেল থানার এসআই তবারক হোসেন, শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক আরিফুর রহমান, ড্রাইভার শামীম হোসেন, মামুন, মর্জিনা খাতুন, আলামীন হোসেন, আবুল হোসেন, নাহিদ হোসেন সহ উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা ও সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জীবননগর অফিস জানিয়েছে:
জীবননগরে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রোববার বিকেলে উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি জীবননগর বাসস্ট্যান্ড ঘুরে একই স্থানে এসে শেষ হয়। পরে উপজেলা হল রুমে উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা হাসিনা মমতাজ এর সভাপতিতে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জীবননগর উপজেলা প্রকৌশলী তাওহীদ আহমেদ, সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা দীন ইসলাম, জীবননগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাকির হোসেন মোড়ল, সিনিয়র সাংবাদিক সালাউদ্দিন কাজল প্রমূখ। এছাড়াও বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও উপজেলা পরিষদের কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। সভায় বক্তারা বলেন, জীবননগরে বেশির ভাগ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে মোটরসাইকেল কেন্দ্রীক। আর বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটে বেপরোয়া গতির কারণে। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।