শেখ লিটন:
দীর্ঘ একযুগ পর আগামীকাল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-মিসিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। দীর্ঘদিন পর এ নির্বাচন ঘিরে শ্রমিকদের মধ্যে উৎসব ও উদ্দীপনা দেখা গেছে। নির্বাচন ঘিরে শহর সেজেছে ব্যানার ফেস্টুন আর পোস্টারে। দীর্ঘদিন পর নতুন নেতৃত্ব নির্বাচনের সময় এসেছে, তাই ভোটারদের মধ্যে বাড়তি আগ্রহ কাজ করছে। প্রার্থীরাও বলছেন, শ্রমিকবান্ধব নেতা হয়ে কাজ করবেন শ্রমিকদের কল্যাণার্থে। যারাই আসুক নেতৃত্বে সেই নতুন কমিটি নিয়ে অপেক্ষার প্রহর গুণছে সাধারন শ্রমিকরা।
জানা গেছে, সবশেষ ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল চুয়াডাঙ্গা জেলা বাস-মিসিবাস কোচ ও মাইক্রোবাস সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। এরপর ১২ বছর পর আগামীকাল শনিবার (২১ অক্টোবর) চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার দৌলতদিয়াড় তাসনিম নূর কমিউনিটি সেন্টারে শুরু হবে ভোট গ্রহণ। আগামীকাল সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত চলবে শান্তিপুর্ণ ভোট গ্রহণ। ভোট গ্রহণ হবে ব্যালটের মাধ্যমে। ইতিমধ্যে ভোটের সব রকম প্রস্ততি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশনার।
এবার নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৩২। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ মোট প্রার্থীর সংখ্যা ৩৯। এর মধ্যে সভাপতি পদে এম. জেনারেল ইসলাম কুঁড়ে ঘর প্রতিক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে লড়ছেন টোকন আলি (মিস্ত্রি) চেয়ার প্রতিক নিয়ে। সাধারণ সম্পাদক পদে রিপন মন্ডল দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে ভোটযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী হয়েছেন আসলাম আলী আনারস প্রতিক নিয়ে। অপরদিকে একক ভাবে সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন জাহাঙ্গীর আলম হাড়িকেন প্রতিক নিয়ে। ৩৯ প্রার্থীর সকলে দিন রাত শ্রমিকদের মাঝে গিয়ে নানা রকম প্রতিশ্রুতি ছুড়ছেন।
দীর্ঘদিন পর নির্বাচন হতে যাচ্ছে, তাই শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছে উৎসবের আমেজ। সারা শহরের কাউন্টারের এলাকাগুলো ছেয়ে গেছে প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানারে। নিয়মিত হচ্ছে ভোট নিয়ে আলাপ আলোচনা ও জল্পনা কল্পনা।
ভোটাররা বলছেন, অনেক বছর পর ভোট হচ্ছে এটা একটা খুশির আমেজ। আমরা চাই যেই আসুক নেতৃত্বে তারা যেন আমাদের কল্যাণে কাজ করে। যেকোনো সমস্যা হলে যেন পাশে পাই। সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে যেন বঞ্চিত না হয়। সেজন্য তাদের কাজ করতে হবে। এটাই আমাদের চাওয়া ও পাওয়া থাকবে।
নির্বাচনে সভাপতি প্রার্থী এম.জেনারেল ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী রিপন মন্ডল অভিন্ন ভাষায় বলেন, ‘শ্রমিকদের ন্যায্য আদায়ে কাজ করবো আমরা। শ্রমিকদের যে কোনো সমস্যার সমাধান নিয়ে পাশে থাকবে। শ্রমিকরা সড়কে আহত হলে বা কোন দুর্ঘটনা হলে তাদের পাশে দাঁড়াবো। এক কথায় শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি অধিকার ও সঠিক মূল্যায়নের লক্ষে কাজ করবে আমাদের প্যানেল।’
অপরদিকে সভাপতি প্রার্থী টোকন আলি (মিস্ত্রি) ও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী বলেন, ‘শ্রমিকদের কল্যাণে যেটা করা দরকার সেটা করবো। শ্রমিকরা যেন কোথাও অসম্মানিত না হয়, তার দিকে খেয়াল রাখবো। শ্রমিকদের মৃত্যু ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। আমাদের প্যানেল শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করবে।’
এ নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনার অ্যাড. সেলিম উদ্দিন খাঁন বলেন, ‘শ্রমিক ইউনিয়নের ভোটের সব ধরনের প্রস্ততি সম্পন্ন হয়েছে। আগামিকাল শনিবার যেন সুষ্ঠুভাবে ভোট হয় সেজন্য আমরা প্রস্তত। আর ভোটের দিনে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। বিকেল ৪টায় ফলাফল ঘোষণা হবে।’