নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার গলাইদড়ি সেতুসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সড়ক ও জনপদ অধিদফতরের আওতায় নির্মিত ১৫০টি সেতু ও মহাসড়কের ১৪টি ওভারপাস উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় তেজগাঁওয়ের সড়ক ভবনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব প্রকল্পের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদান কার্যক্রমেরও উদ্বোধন করেছেন সরকার প্রধান। এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আয়ানের বাবার হাতে ৫ লাখ টাকার চেক তুলে দেয়া হয়। এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা জেলার সাথে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে চুয়াডাঙ্গা প্রান্ত থেকে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মুনজুরুল করিম, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমগীর হান্নান, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকনসহ বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তারা।
চুয়াডাঙ্গা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা-মুজিবনগর সড়কের মাথাভাঙ্গা নদীর উপর নির্মিত ১১২.৫৫ মিটার দৈর্ঘ্য ও ১০.২৫ মিটার প্রস্থ সেতুটি নির্মান করা হয়। এর ব্যয় হয় ১৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা। গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির উদ্বোধন করেন।
এদিকে চলতি বছরের জুলাই মাসে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার বন্ডবিলের রোয়াকুলি গ্রামের আবদুল্লার ছেলে আয়ান (১০) সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়। আয়ানের ক্ষতি পূরণ বাবদ ৫ লাখ টাকার চেক আয়ানের বাবা আবাদুল্লার হাতে তুলে দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা।
ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সড়কে অস্বভাবিক প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্দ্বিতা পরিহার করতে হবে। চালকদের এটা বুঝাতে হবে। বাস ট্রাক ড্রাইভার ও যাত্রীদের বিশ্রামের সুযোগ করে দিচ্ছি। গাড়ি চালাতে যেমন পেট্রোল লাগে, যাকে দিয়ে চালাবেন, তারও তো পেট্রোল দরকার। সেও তো একটা মানুষ, তার তো বিশ্রাম দরকার। বিশ্রামের সুযোগ দিতে হবে, তাদের যত্ন নিতে হবে। ড্রাইভারদের বলবো, দুর্ঘটনায় শুধু মানুষের জীবন যায় তা না, নিজেরও তো ক্ষতি হয়। গতি মেনে চলতে হবে। সড়কে ট্রাফিক আইন মেনে চলতে হবে।
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তাদের সহায়তা করেছি। অগ্নিসন্ত্রাসেও অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, আমরা তাদেরও সহযোগিতা করেছি। বাংলাদেশের মানুষের জীবনে যেনো এ ধরনের অগ্নিসন্ত্রাসের পরিস্থিতি না আসে। আমি বলেছি, কেউ আগুন দিতে আসলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিবে।
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আন্দোলন করুক আপত্তি নেই। আমরাও সারাজীবন আন্দোলন করেই আজ ক্ষমতায় আসছি। তারা ক্ষমতায় আসতে চায়, আন্দোলন করুক। আন্দোলন করেই এক সময় ক্ষমতায় আসবে। কিন্তু মানুষের ক্ষতি যেনো করতে না পারে। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। তারা প্রতিদিন আমাদের পদত্যাগ চায়। সে দাবিতে প্রতিদিন আন্দোলন করছে, করুক। আমার আছে জনগণ। আমারতো আর কেউ নেই। বাবা-মা ভাইবোন সবইতো হারিয়েছি।