নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা জেলা সমন্বয় কমিটির মাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা। সভায় অংশ নিয়ে বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা জেলার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোকপাত করেন। এর মধ্যে সড়কে দুর্ঘটনা রোধ, যানজট নিরসন, বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালনা রোধ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা ফেরানো ও আত্মহত্যার প্রবণতা এবং নিরাপদ সবজি উৎপাদন বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। মাসিক সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আনিসুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. ফাতেহ্ আকরাম, চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকনসহ বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের প্রধানগণ, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, জনপ্রতিনিধিবৃন্দ, সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ এবং গণমাধ্যমকর্মিরা।
সর্বজনীন পেনশনের আওতায় আসার আহ্বান
গতকাল অনুষ্ঠিত জেলা সমন্বয় সভার শুরুতে জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত আগস্ট মাসের ১৭ তারিখে সবার জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কীম চালু করেন। গতকাল মঙ্গলবার দুই মাস পূর্ণ হয়েছে। এ দুই মাসে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৫৯ জন রেজিষ্ট্রেশন করেছে। এর টাকার পরিমান ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। আর খুলনা বিভাগে ১হাজার ৫৫৯ জন রেজিষ্ট্রেশন করেছে। খুলনা বিভাগের মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা সবার নিচে। ১৮-৬০ বছরের মধ্যে সরকার চার ধরনের পেনশন স্কীম চালু করেছে। তিনি আরো বলেন, পেনশন স্কীম নিয়ে বিভিন্ন ধরনের গুজব ছড়ানো হচ্ছে। গুজব থেকে সতর্ক থাকতে হবে। এই পেনশন স্কীমের গ্যারান্টার সরকার। বিধায় পেনশন স্কীম নিয়ে সন্দেহের বিন্দু মাত্র অবকাশ নেই। জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা সবাইকে সামনের দিনগুলোতে বেশি করে পেনশন স্কীমের আওতায় আসার উদাত্ত আহ্বান জানান।
আত্মহত্যা, মাদক ও ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্ব
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, জেলায় আত্মহত্যা ও মাদকদ্রব্য ব্যবহারের প্রবণতা তুলনামূলক বেশি। আত্মহত্যার হার কমাতে এবং মাদক নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ও সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। এজন্য সবাইকে সমমনা হতে হবে। সড়ক দুর্ঘটনার মাত্রাও অনেক বেশি। দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করে তা রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগীতায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইজিবাইকের সংখ্যা অনেক বেশি। ইজিবাইকের দাপটে একটি অসুস্থ রোগী সদর হাসপাতালে পৌঁছাতে পারে না। ইজিবাইকের দৌড়াত্ম্য কমিয়ে আনার জন্য ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে। ডিঙ্গেদহ-সরোজগঞ্জ এলাকায় পথচারীদের যাতায়াত সুরক্ষিত করতে রাতের বেলায় সড়ক বাতি স্থাপনের বিষয়টি বিবেচনায় রয়েছে। এছাড়া দ্রব্যমূলের উর্ধ্বগতি রোধে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হবে
ভালো নেই চুয়াডাঙ্গা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল
সমন্বয় সভায় চুয়াডাঙ্গা জেলার একমাত্র ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল নিয়ে আলোচনা করা হয়। হাসপতালের বিষয়ে জেলা প্রশাসক বলেন, জেলার এক মাত্র ২৫০ শয্যা হাসপাতালে স্বাস্থ্য সেবার হালহকিকত ভালো নয়, হাসপাতালের সংকট কাটিয়ে জনবলসহ অন্যান্য সুবিধার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পত্র পাঠানো হয়েছে। আশা করা যায়, সংকট নিরসন হবে এবং স্বাস্থ্য সেবার স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। শহরের সড়কের পাশে ময়লা আবর্জনা ফেলা রাখা হয়, যা পরিবেশের জন্য হুমকি। এসব ময়লা আবর্জনা যত্রতত্র না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলতে হবে।