নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে চুয়াডাঙ্গায় গণঅনশন কর্মসূচি পালন করেছে জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সাহিত্য পরিষদ চত্বরে গণঅনশন কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচির নির্ধারিত সময়ের আগেই খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা যোগ দেন গণঅনশনে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনার সভাপতিত্বে গণঅনশন কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি থেকে থেকে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় বিএনপির উপ-কোষাধ্যক্ষ মাহমুদ হাসান খান বাবু।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘এই সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাবন্দি রেখেছে। বর্তমানে তিনি গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। খালেদা জিয়ার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন তাকে সুস্থ করতে হলে অবিলম্বে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানোর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এই সরকার তা আমলে নিচ্ছে না।’ আমরা আবারও আহ্বান জানাই, অবিলম্বে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিয়ে বিদেশে পাঠিয়ে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দিতে। তা না হলে খালেদা জিয়ার কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। গণঅনশন কর্মসূচিতে প্রধান সঞ্চালক হিসেবে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফ। তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে আমাদের দলের চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে এই সরকার। আজকে বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ এবং নিঃসঙ্গ অবস্থায় হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন। পরিবারের পক্ষ থেকে, দেশের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা এমনকি আন্তর্জাতিকভাবে বলা হচ্ছে খালেদা জিয়াকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হোক। তাকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হোক। কিন্তু বর্তমান ভোট ডাকাত সরকার তা আমলে নিচ্ছে না। আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছি যে, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে সম্পূর্ণ দায় দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে। আমি ঘোষণা দিচ্ছি সরকার পতনের এক দফা দাবি আদায় ও গনতন্ত্রের মাতা বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। ’
গণঅনশনে বিষেশ অতিথি থেকে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত, জেলা মহিলা দলের সভাপতি রউফ উর নাহার রিনা, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খান খোকন, আলমডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, জিবনগর পৌর বিএনপির সভাপতি শাহাজাহান কবির, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু বক্কর সিদ্দিক আবু, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মীর্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু ও জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মোকাররম হোসেন। গণঅনশনের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির ধর্মে বিষয়ক সম্পাদক মওলানা ইদ্রিস আলী।
শনিবার সকাল ১০ টায় শুরু হওয়া গণঅনশন কর্মসূচি চলে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। পরে বীর মুক্তিযোদ্ধা খাজা আবুল হাসনাত ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আহমদ আলী অনশন কর্মসূচির সভাপতি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, প্রধান অতিথি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ও প্রধান সঞ্চালক জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান শরীফকে পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙান। এসময় গণঅনশনে অংশ নেওয়া বিএনপির সকল নেতাকর্মীরা পানি পান করলে অনশন কর্মসূচির সমাপ্ত হয়।