মেহেরপুর অফিস:
নিখোঁজের একমাস পর পরকীয়া প্রেমিকার বাড়ির পরিত্যক্ত কুয়া থেকে লালটু (৩৫) নামে এক নির্মাণ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস। গতকাল বুধবার দুপুরে মেহেরপুরের গাংনী থানা পুলিশের একটি টিম হাড়াভাঙ্গা গ্রামে এ অভিযান চালায়। এ ঘটনায় নিহতের প্রেমিকা এক সৌদি আরব প্রবাসীর স্ত্রী সাবিনা খাতুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নিহত লাল্টু নওদাপাড়া গ্রামের ছাইনুদ্দীনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, গত ১২ সেপ্টেম্বর রাতে নিজবাড়ি থেকে হাড়াভাঙ্গা গ্রামের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার পর থেকেই লাল্টু নিখোঁজ হন। পরকীয়া প্রেমিকা তাকে হত্যা করে মরদেহ গুম করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। নিখোঁজ ছেলের সন্ধান চেয়ে ১৪ সেপ্টেম্বর লাল্টুর মা গাংনী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
এদিকে গোপন অনুসন্ধানে পরকীয়া প্রেমিকা সাবিনার বাড়ির পাশে পরিত্যাক্ত কুয়ার মধ্যে লাল্টুর মরদেহ রয়েছে বলে জানতে পারে পুলিশ। বিষয়টি আরও স্পষ্ট হতে সাবিনাকে মঙ্গলবার রাতে পুলিশ হেজাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সাবিনার স্বীকারোক্তি মোতাবেক পরিত্যাক্ত কূপ থেকে গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সাবিনা খাতুনের দাবি, তিনি স্বামী-সংসার ছেড়ে বিয়ে করতে অপারগতা প্রকাশ করায় অভিমানী প্রেমিক লাল্টু ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। পরে মৃত্যুর চিহ্ন মুছে দিতে তার মরদেহ কুয়ায় ফেলে দেওয়া হয়।
নিহত লাল্টুর ভাই পল্টু মিয়া জানান, লাল্টু একজন নির্মাণ শ্রমিক। প্রবাসীর স্ত্রী সাবিনার বাড়িতে ইটভাঙ্গার কাজ করার সুবাদে যাওয়া-আসা হয়। এক পর্যায়ে তারা পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়ে। গত ১০ সেপ্টেম্বর লাল্টুর বাড়িতে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন সাবিনা খাতুন। পরে ১২ তারিখে নিখোঁজ হন লাল্টু। এতে করে সাবিনার প্রতি সন্দেহ আরও প্রকট হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। নজরদারী করা হয় সাবিনার বাড়ির উপর।
এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে পুলিশ সাবিনাকে মঙ্গলবার হেফাজতে নেয়। জিজ্ঞাসাবাদে মরদেহ কুয়ার রয়েছে বলে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেয় সাবিনা। গতকাল বুধবার দুপুরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা দীর্ঘ প্রচেষ্টার পর বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে গলিত মরদেহ ও হাড়গোড় উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বলে জানান তিনি। গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তাজুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আরও খতিয়ে দেখে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।