জীবননগর অফিস:
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে বহিরাগত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের (হিজড়া) বিরুদ্ধে প্রভাব খাটিয়ে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ তুলেছে জীবননগরের স্থানীয় হিজড়া সম্প্রদায়। এ বিষয়ে গত রবিবার (১অক্টোবর) উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার শুনানির দিন ধার্য ছিল। তবে বিবাদী পক্ষ হাজির না হওয়ায় শুনানি করা সম্ভব হয়নি। এদিকে, এ সমস্যা সমাধানের জন্য আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোক্তারের দাবি মতে এক লাখ টাকা দিয়েছিল স্থানীয় হিজড়ারা। তবুও তাতে কোন লাভ হয়নি।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, জীবননগর এলাকায় বসবাসকারী হিজড়াদের তেমন কোনো আয় না থাকায় তাদের দুর্দিন চলছে। এ অবস্থায় ১বছরের মত সময় ধরে পার্শ্ববর্তী পোড়াদহ এলাকার নয়ন তারা, বেবি ও আঁখি নামের তিন হিজড়া জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নে এসে জোর করে চাঁদা আদায় করছে। বিষয়টি নিয়ে তৎকালীন আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোক্তারের নিকট অভিযোগ করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি সমাধানের জন্য ১ লাখ টাকা দাবি করেন। তারা বিষয়টি সমাধানের জন্য চেয়ারম্যানের নিকট ১ লাখ টাকা দেন। কিন্তু চেয়ারম্যান দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বিষয়টি সমাধান করতে ব্যর্থ হন। পরে টাকা ফেরত চাইলেও তিনি ফেরত দেননি। বহিরাগত পোড়াদহ এলাকার হিজড়াদের প্রভাব প্রতিপত্তির কারণে অসহায় হয়ে পড়েছে সবাই। তাই জীবননগেরর স্থানীয় হিজড়া সম্প্রদায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছে। অভিযোগ দায়ের পর উপজেলা নির্বাহী অফিসার উভয় পক্ষকে শুনানীর জন্য ৪ অক্টোবর শুনানির দিন ধার্য করেন। কিন্তু বিবাদীরা উপস্থিত না হয়ে সময় প্রার্থনা করেছে। বর্তমানে তারা বহিরাগত হিজড়াদের অত্যাচারে কাজ করতে না পেরে জীবননগর এলাকার হিজড়াগণ চরম অভাব অনটনের মধ্যে দিনযাপন করছে।
জীবননগর এলাকার হিজড়াদের পক্ষে রত্না বলেন, ‘আমরা বিষয়টি নিরসনের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি আবেদন করেছি। আমরা যাতে আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোক্তারের নিকট থেকে আমাদের দেওয়া টাকা ফেরত পাই ও বহিরাগতরা যাতে আমাদের এলাকার মধ্যে প্রবেশ করতে না পারে তার জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয় সুষ্ঠু সমাধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।’
টাকা নেওয়ার বিষয়ে আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোক্তার বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় জীবননগর এলাকার হিজড়াদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করা করেছিলো। কিন্তু আমার নিকট তারা কোনো টাকার লেনদেন করিনি।’
এ বিষয়ে জীবননগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাসিনা মমতাজ বলেন, ‘জীবননগরে হিজড়া সম্প্রদায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। সে মোতাবেক আমি তাদের একটি নোটিশ পাঠিয়েছিলাম। তারা নোটিশ পেয়ে চিঠির মাধ্যমে সময় চেয়েছে, তারা উপস্থিত হতে পারিনি। আমি আন্দুলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বিষয়টি দায়িত্ব দিয়েছি এবং লিখিত দিয়েছি তিনি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবেন। একইসাথে জীবননগরে বাইরে কোন তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যাতে প্রভাব খাটাতে না পারে সে ব্যপারে তিনি উপযুক্ত ব্যবস্থা নিবেন।