নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহকারি শিক্ষক শাকিল আরাফাতের বিরুদ্ধে ছাত্রী যৌন নিপীড়নের ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছে সহপাঠী ও অভিভাবকরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১০টায় মানবন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা। এসময় জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপিও দেন ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। পরে জেলা প্রশাসকের আশ^াসে স্কুলে ফেরেন তারা। বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বহিষ্কার ও শাস্তির দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়া হয় এবং শিক্ষকের অপকর্ম ফাঁস করা হয়।
শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষক শাকিল আরাফাত স্কুলের শিক্ষার্থীদের দিকে কু-নজরে তাকাতো। বিভিন্ন অশালিন কথাবার্তা এবং তার কাছে না পড়লে পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখাতো। শিক্ষক শাকিলের শাস্তির দাবি জানান তারা।
এদিকে, ঘটনা তদন্তে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তারকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, ইতিমধ্যে আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমরা বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরত্ব দিয়ে দেখছি। এর সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদে নিবৃত করে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান তিনি।
এর আগে গত সোমবার এ ঘটনায় স্কুল ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলার দায়ের করেন। সেদিন বিকালে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার শেখপাড়ার ভাড়াবাসা থেকে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত শাকিল আরাফাত ঝিনাইদহ জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ফরাশপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি সহকারী শিক্ষক শাকিল আরাফাতের কাছে তার ভাড়া বাসায় প্রাইভেট পড়তো একই স্কুলের ১০ম শ্রেণীর এক ছাত্রী। সকালে প্রাইভেট পড়ে আসার সময় অভিযুক্ত শিক্ষক ভুক্তভোগী ছাত্রীকে ৮ম শ্রেনীর ছাত্রীদের কিছু খাতা দেখে দেওয়ার জন্য সকাল সাড়ে ৬ টার সময় আসতে বলেন। ওই ছাত্রী শিক্ষকের কথা মত সকালে তার বাসায় যায়। সকালে বাসায় কেউ না থাকার সুযোগে ছাত্রীকে তার বেড রুমে নিয়ে যেয়ে শ্লীলতহানির চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রতিরোধে সৃষ্টি করে শিক্ষক কে ধাক্কা দিয়ে ফেলে ঘর থেকে বেরিয়ে পালিয়ে আসে। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ অভিযুক্ত শিক্ষক শাকিল আরাফাতকে গ্রেফতার করেন।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাহাব্বুর রহমান বলেন, গতকাল সকালে অভিযুক্ত শিক্ষককে আদালতে তোলা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।