নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়। এ উপলক্ষে গতকাল রবিবার সকাল ১০ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পরে বেলুন উড়িয়ে ও শ্বেতকপোত অবমুক্ত করা হয়। পরে একই স্থান থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালীটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।
সকাল সাড়ে ১০ টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাঙালি জাতিকে স্বাধীন একটি দেশ উপহার দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধু তার জীবনের শেষ পর্যন্ত লড়াই করে করে গেছেন। বিশ্ব শান্তি পরিষদ তৎকালীন বৈশ্বিক শান্তি স্থাপনে যেসকল ব্যক্তি অবদান রাখতেন তাদের উৎসাহিত করতে এ পুরস্কার প্রদান করা হতো। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের শোষিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তিনি শোষিতদের পক্ষে কথা বলতেন। জাতির পিতার এই অর্জন বাঙালি জাতির অর্জন। আজ জাতির জনকের সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও বিশ্বব্যাপী সম্মান অর্জন করে বাঙালী জাতিকে এনে দিচ্ছেন সাফল্য ও সম্মান। এটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মঞ্জু, পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল-মামুন চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর সিদ্দিকুর রহমান প্রমুখ। আলোচনা সভায় মুল আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. আব্দুর রশিদ।
আলোচনা সভায় আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম মালিক। আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, এনএসআই’র উপ-পরিচালক, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভূইয়া, জেলা শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাজহারুল ইসলাম, জেলা মার্কেটিং অফিসার সহিদুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গা জজ কোর্টের সরকারি কৌশুলী অ্যাড. আবু তালেব বিশ্বাসসহ বিভিন্ন সরকারি দফতরের কর্মকর্তাবৃন্দ। পরে দিবসটি উপলক্ষে সন্ধ্যায় জেলা শিল্পকলা একাডেমী চত্বরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
দামুড়হুদা অফিস জানায়, দামুড়হুদায় উপজেলায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রাপ্তির ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় উপজেলা পরিষদের বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শোভাযাত্রা শেষে সম্মেলন কক্ষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় দামুড়হুদা উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির শিল্পীরা মনমুগ্ধকর সংগীত পরিবেশন করেন। উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকসানা মিতা। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে অংশগ্রহণ করেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) সজল কুমার দাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশ শিক্ষাতথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরো (ব্যানবেইস) সহকারী অফিসার আব্দুল কাদির, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ছবির উদ্দিন, যুব উন্নয়ন অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান, মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা হোসনে জাহান, প্রাণী সম্পদ সম্প্রসারণ অফিসার ডাঃ আঃ রাকিব, উপজেলা বীর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার রুস্তম আলী, সাবেক উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি সিরাজুল আলম ঝন্টু, দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) শফিউল আলম, দামুড়হুদা বাজার কমিটির সভাপতি মাকসুদুর রহমান রতন প্রমুখ। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে সকাল সাড়ে ১১টায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে চিত্রাঙ্কন ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় ও বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন স্বেচ্ছায় রক্তদান ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প আয়োজন করেছে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ মুনাজাত ও প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পুরষ্কার শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মানুষের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠায় অনন্য ভূমিকা পালন করেন।