নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গার দর্শনার বাড়াদী সীমান্ত থেকে প্রায় আড়াই কেজি ওজনের ২০ টি স্বর্ণেরবার উদ্ধার করেছে ৬ বিজিবি’র সদস্যরা। এসময় আটক করা হয়েছে নারী পাচারকারী শাহানারা খাতুনকে। স্বর্ণের বারগুলো ওই নারীর বুকের মধ্যে বিশেষ কায়দায় লুকানো ছিল। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার টাকা। গতকাল বুধবার দুপুর ১টার দিকে বাড়াদী সীমান্তের নাস্তিপুর গ্রামের জোড়া কবরস্থানের পাশ থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক শাহানারা খাতুন (৪৮) নাস্তিপুর গ্রামের মৃত আবুল কাশেমের স্ত্রী।
বিজিবি জানায়, নিজস্ব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বারাদী সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে স্বর্ণ চোরাচালান হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যায়। এরই ভিত্তিতে বারাদী বিওপি কমান্ডার নায়েব সুবেদার আহসান কবীর সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে সীমান্ত পিলার ৭৯/৬-আর থেকে আনুমানিক ১ কিলোমিটার বাংলাদেশের ভিতরে নাস্তিপুর গ্রামের জোড়া কবরস্থান এলাকায় অবস্থান করে। দুপুর ১টার দিকে একটি অটোরিক্সা দর্শনা থেকে নাস্তিপুর সীমান্তের দিকে যেতে দেখলে বিজিবি সশস্ত্র টহল দল অটোরিক্সাটির গতিরোধ করে। এসময় অটোরিক্সায় যাত্রীদের মধ্যে একজন বোরকা পরিহিত নারীকে সন্দেহ হলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছে কোন চোরাচালানী পণ্য নেই বলে বিজিবিকে জানান। পরবর্তীতে বিজিবি টহল দলের নারী সদস্যরা যাত্রী শাহানারা খাতুনের দেহ তল্লাশি করে বুকের ভিতর অভিনব কায়দায় লুকানো অবস্থায় স্কসটেপ দিয়ে মোড়ানো ২টি প্যাকেট জব্দ করে। যার ভেতর থেকে ২ কেজি ৩৪১ গ্রাম ওজনের ২০টি স্বর্ণের বার এবং ১টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে সক্ষম হন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ২ কোটি ৩৪ লাখ ১২ হাজার টাকা।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান জানান, স্বর্ণের শুল্ক কর ফাকি দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্যেশ্যে পরিবহন করা ও নিজ জিম্মায় রাখার অপরাধে অভিযুক্ত নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃত আসামীর বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করে স্বর্ণেরবারগুলো চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারী অফিসে জমা দেয়া হয়েছে।
অপরদিকে , চুয়াডাঙ্গার সীমান্তবর্তী দর্শনা এলাকা থেকে ৭৭ কেজি ৭শ’ গ্রাম ওজনের ভারতীয় রুপার গহনা উদ্ধার করেছে চুয়াডাঙ্গা ৬-বিজিবি। এ সময় সোহাগ নামে পাচারকারী পালিয়ে যায়। পলাতক পাচারকারী সোহাগ (৩০) দর্শনা মোবারকপাড়ার মৃত বাবু আলীর ছেলে। গতকাল বুধবার বিকাল ৫টার দিকে দর্শনা বিওপির মোবারকপাড়া আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব ভারতীয় রুপা উদ্ধার করা হয়।
বিজিবি জানায়, দর্শনা এলাকা দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে বাংলাদেশে বিপুল পরিমান তৈরীকৃত রুপার গহনা পাচার করা হচ্ছে- এমন তথ্যের ভিত্তিতে সীমান্ত মেইন পিলার ৭৬ থেকে আনুমানিক ৪ কিলোমিটার বাংলাদেশের ভিতরে দর্শনা মোবারকপাড়া আবাসিক এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ওই এলাকায় বসবাসকারী মোস্তফা আলীর বসতবাড়িতে চোরাকারবারী সোহাগের ফেলে যাওয়া রুপাভর্তি ৪টি প্লাষ্টিকের বস্তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। এরপর পার্শ্ববর্তী সোহাগের বসতবাড়ি থেকে স্কচটেপ দিয়ে মোড়ানো ১২৬টি খালি প্যাকেট এবং ১টি মোটর সাইকেল উদ্ধার করা হয়। প্লাষ্টিকের ৪টি বস্তার ভেতর থেকে ৭৭ কেজি ৭শ’ গ্রাম ভারতীয় তৈরীকৃত রুপার গহনা উদ্ধার করা হয়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি ২২ লাখ টাকা।
চুয়াডাঙ্গা-৬ বিজিবির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাঈদ মোহাম্মাদ জাহিদুর রহমান জানান, এ ব্যাপারে সুবেদার জহির উদ্দিন বাবর বাদী হয়ে পলাতক পাচারকারী সোহাগের বিরুদ্ধে দর্শনা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। একইসাথে উদ্ধারকৃত ভারতীয় রুপার গহনা চুয়াডাঙ্গা ট্রেজারী অফিসে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।