দামুড়হুদা অফিস:
প্রবাসে একজন প্রবাসীর মৃত্যু মানে পুরো একটি পরিবারের মৃত্যু। এমনই এক মর্মান্তিক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে প্রবাসে থাকা দামুড়হুদা উপজেলার বাস্তপুর গ্রামের বখতিয়ার হোসেন কালু (৪৮) নামের এক মালয়েশিয়া প্রবাসী মৃত্যুতে। প্রবাসীর মৃতদেহ বাংলাদেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনতে স্ত্রী, একমাত্র সন্তানসহ শোকাহত পরিবারের আকুতি। গত শুক্রবার (১২ মে) স্থানীয় সময় সাড়ে ছয়টার দিকে প্রবাসে নিজ কর্মস্থলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করেন তিনি।
দামুড়হুদা উপজেলার হাউলি ইউনিয়নের বাস্তপুর গ্রামের মৃত দোস্ত মোহাম্মদের ছেলে মালয়েশিয়া প্রবাসী বখতিয়ার হোসেন কালুর (৪৫) মৃত্যুতে এক নারী হারালেন তার সংসার, সন্তান হারালেন পিতা আর পরিবার হারালেন তাদের আপনজনকে। একটি পরিবার হারিয়ে ফেললেন তাদের স্বপ্ন ও সুখ। এরপরও নিয়তির লিখন মেনে নিতে চাইছেন প্রবাসীর আপনজনেরা। এখন স্ত্রী, সন্তানসহ সকলের একটাই আকুতি আর আহাজারি তাদের প্রিয় মানুষের মৃতদেহটি দেশের মাটিতে ফিরিয়ে নিয়ে আসার। কিন্তু নানা জটিলতায় তার মৃতদেহটি দেশের মাটিতে ফিরিয়ে আনা যাবে কি তা নিয়ে দুশ্চিন্তার প্রহর গুনছেন পরিবারের সদস্যরা।
পারিবারিকভাবে জানা যায়, প্রবাসে তেমন কোন কাজ না থাকায় ভালো ছিলেন না বখতিয়ার। এরপরও দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর ভালো কোন কাজ পাবেন, এমন স্বপ্ন নিয়েই সে মালয়েশিয়ার শাহ্ আলম বুধরোজা শহরে কাজ থাকতেন। ১২ ই মে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃতদেহটি দেশে ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও অর্থ না থাকার সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমানে মালয়েশিয়ায় শাহ আলম হাসপাতালে তার মৃতদেহটি পড়ে রয়েছে। বখতিয়ারের মৃতদেহটি আদৌও দেশে ফিরিয়ে আনা যাবে কি না তা জানেনা পরিবারটি।
নিহত প্রবাসীর চাচা হাউলি ইউনিয়নের সাবেক সদস্য সিরাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, প্রায় দীর্ঘ ৯ টি বছর ধরে সে মালয়েশিয়া শাহ্ আলম বুধরোজা নামক শহরে বাস করতেন। তবে তার তেমন আয় রোজগার হতো না। কাজের আশায় প্রবাসে ছিলেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে ষ্ট্রোক করে মারা যান। মরদেহটি দেশের মাটিতে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে, জানিনা কি হবে। তার স্ত্রী বাকরুদ্ধ প্রায়। এগারো বছর বয়সের একমাত্র ছেলেটিও তাঁর পিতাকে শেষবারের মতো দেখার জন্য কান্নায় ভেঙে পড়েছে।
বখতিয়ারের একমাত্র ছেলে মাহিন (১২) তাঁর বাবাকে কবে দেখেছেন ঠিকমতো মনে নেই হয়তো। মাহিন বলেন, মায়ের কাছে জেনেছি, আমি যখন খুব ছোট তখন আমার বাবা বিদেশে যান। আমি বাবাকে দেখতে চায়। শেষবারের মতো আমার বাবাকে দেখা করার ব্যবস্থা করে দেন আপনারা বলে অঝরে কাঁদতে থাকেন।
হাউলি ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দীন জানান, বিষয়টি অনেক জটিল। পরিবারের লোকজন মরদেহটি দেশে আনার চেষ্টা করছেন।