শেখ লিটন:
চুয়াডাঙ্গায় চারা পাটে বিসা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে পাট চাষিরা তাদের পাটের কাঙ্খিত ফলন নিয়ে পড়েছে দুশ্চিন্তায়। গেল কয়েকদিন ধরে ঝুম বৃষ্টি না হওয়াতে পাটে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন প্রতিষেধক বিষ স্প্রে করেও কোনো কাজে আসছে না।
জানা গেছে, গেল কিছু দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তিব্র তাপপ্রবাহ। দেখা নেই বৃষ্টির। অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ ও অনাবৃষ্টির কারণে কয়েকদিন ধরে চুয়াডাঙ্গার মাঠকে মাঠ পাটে হঠাৎ করে বিসা পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। চারা পাটের কচি পাতা খেয়ে ফেলছে। এতে পাট বড় না হওয়ার আশঙ্কা আছে। আর এসময় চারা পাটে পোকার আক্রমণ দেখা দিলে উৎপাদন ফলন নিয়ে পড়তে হবে দুশ্চিন্তায়। কৃষকরা তাদের পাটে বিভিন্ন প্রতিষেধক বিষ স্প্রে ব্যবহার করছে কিন্তু কোন প্রতিকার পাচ্ছে না।
একবিঘা পাট চাষ করতে খরচের পরিমাণ দাঁড়ায় ১২-১৩ হাজার টাকা। এবার কৃষি উপকরণের দাম বেশ চড়া। আবার পাটে লেগেছে পোকা। তাই পাট চাষে অনেক খরচ হয়ে যাচ্ছে। বছর শেষে পাটে চাষ করে প্রতি মণ পাট বিক্রি হয় ২ হাজার ৫০০ টাকা। এই দামের কাছে বছর শেষে লোকসানে পড়ে যায় পাট চাষিরা। এখন থেকে চারা পাটে পোকার আক্রমনে খরচ অনেক বেশি পড়ছে। এ কারনে পাট চাষ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন কৃষকরা।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এবার চুয়াডাঙ্গায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০ হাজার ৫২৭ হেক্টর। এর বিপরীতে চাষ হয়েছে ১৪ হাজার ৪০৩ হেক্টর জমিতে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা হাজরাহাটি গ্রামের কৃষক সাইদুল শেখের কাছে জানতে চাইলে তিনি এই প্রতিবেদককে বলেন, এবার চারা পাটে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আবার অনেক দিন ধরে বৃষ্টি নেই। অতিরিক্ত খরার কারণে পাটে পোকা আক্রণ করছে। এতে আমাদের পাটে ভালো ফলন পাব না। উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা ।
সদর উপজেলা বেলগাছি গ্রাামের অপর কৃষক মীর আব্বাস বলেন, পাটে পোকার আক্রমণের কারণে পাট চাষে খরচ অনেক বেশি পড়ে যাচ্ছে। এদিকে আবার কৃষি উপকরণের দাম বেশি । পোকার আক্রমণের কারণে পাট মনে হয় বেশি বড় হবে না। তাই এবার পাট নিয়ে লোকশানে পড়ে যাব।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাষ চন্দ্র সাহা বলেন, চুয়াডাঙ্গার কৃষকদের সেচ সুবিধা রয়েছে। তাই আসা করি লক্ষ্যমাত্রার কাছে চলে যাবে। তবে এবার চারা পাটে পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। পোকার আক্রমণ ঠেকানোর জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পাট চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এ বছর পাটের মৌসুমে তাপমাত্রা অনেক বেশি ছিল। তাই পোকার আক্রমণ হয়েছে। তবে চিন্তার কিছুই নেই। পাটের উৎপাদন যেন ভালো হয় সেজন্য কার্যক্রম চলমান আছে।