নিজস্ব প্রতিবেদক:
নানা আয়োজনে চুয়াডাঙ্গায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস পালন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, কেক কাটা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। চুয়াডাঙ্গা জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পূষ্পস্তবক অর্পণ করেন। বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সাবেক আবু হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দরা, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের সদ্য সাবেক স্বাস্থ্য পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, পৌর মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক খোকনের নেতৃত্বে চুয়াডাঙ্গা পৌর পরিষদ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ, সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজ, আনসার ও ভিডিপি, গণপূর্ত বিভাগ, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড চুয়াডাঙ্গা, এলজিউডি, চুয়াডাঙ্গা টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, টিটিসি, চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রি কলেজ, চুয়াডাঙ্গা স্বাস্থ্যবিভাগ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ স্বাস্থ্যবিভাগ চুয়াডাঙ্গা, চুয়াডাঙ্গা জেলা গণগ্রন্থাগার, বাংলাদেশ কৃষি ইন্সটিটিউট চুয়াডাঙ্গা, বিএডিসি, মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি, জেলা মৎস্য অফিস, রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি চুয়াডাঙ্গা, ফায়ার সার্ভিস চুয়াডাঙ্গাসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি দপ্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
এরপর সকাল ১০টায় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরের ডিসি সাহিত্য মঞ্চে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত হয়। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর আগে ও পরে বহু খ্যাতিমান রাজনীতিবিদ এসেছেন। কিন্তু এমন করে কেউ বাঙালিকে জাগাতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু তার নেতৃত্বের সম্মোহনী শক্তির এক জাদুকরী স্পর্শে ঘুমন্ত ও পদানত বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তুলে স্বাধীনতার মন্ত্রে উদ্দীপ্ত করেছিলেন।
আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি আদর্শ, চেতনা ও দর্শনের নাম। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ। তিনি নিজেই একটি ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাঙালির বঙ্গবন্ধু নয়, তিনি বিশ্ববরেণ্য রাজনীতিক ‘বিশ্ববন্ধু’ উপাধিতেও বিশ্বনন্দিত। বঙ্গবন্ধুর শ্রেষ্ঠত্ব হল তিনি শুধু বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের একজন স্বপ্নদ্রষ্টাই ছিলেন না, তিনি বাঙালি জাতিকে অনন্যসাধারণ ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করে হাজার বছরের বাঙালি জাতির স্বপ্নকে বাস্তবে রূপদান করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এ সময় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান শিশুদের প্রতি দৃষ্টি আর্কষণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সম্পর্কে জানতে হবে। বাংলাদেশ সম্পর্কে জানতে হবে। একজন মানুষ কিভাবে বাঙালী জাতির জনক হলেন, সেই ত্যাগ ও তিতিক্ষার কথা জানতে হবে। বঙ্গবন্ধু সারাজিবন আমাদের কথা ভেবেছেন। আমাদের কথা চিন্তা করেছেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান মনজু, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র জাহাঙ্গীর আলম মালিক, চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর এ কে এম সাইফুর রশিদ, চুয়াডাঙ্গা সরকারি আদর্শ মহিলা কলেজের প্রফেসর আজিজুর রহমান।
চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি আবু সাঈফের প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আজাদুল ইসলাম আজাদ, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আরাফাত রহমান, চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কবীর হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাজমুল হামিদ রেজা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিম ভূঁইয়া, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামীলীগের সদ্য সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী, এনডিসি সাদাত হোসেনসহ চুয়াডাঙ্গা কালেক্টরেটের সিনিয়র ও সহকারি কমিশনারবৃন্দ, বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যাক্তি, সাংবাদিক, ও সুশিল সমাজের প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে শিশুদের সাথে নিয়ে অতিথিরা বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনের কেক কাটেন। পরে বিভিন্ন জেলা শিল্পকলা একাডেমি ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এর আগে দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিযোগীতার পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।